বাঘের থাবা থেকে বেঁচে শিয়ালের মুখে !


অনলাইন ডেস্কঃ জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারামের বর্বরতা থেকে রক্ষা পেয়ে নাইজেরিয়ার নারীরা দেশটির সেনাবাহিনীর সদস্যদের হাতে ধর্ষণের শিকার হন। প্রতীকী অর্থে, বাঘের থাবা থেকে প্রাণে বেঁচে শিয়ালের মুখে পড়ছেন অসহায় এসব নারী।

মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বৃহস্পতিবার নাইজেরীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছে। লন্ডনভিত্তিক এ সংস্থাটি নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনী যুদ্ধাপরাধ করেছে বলেও অভিযোগ করেছে।

সংস্থাটির প্রকাশিত ৮৯ পাতার প্রতিবেদনে প্রত্যক্ষদর্শী ও নির্যাতনের শিকার নারীদের সাক্ষাৎকার ও জবানবন্দি সংযুক্ত করা হয়েছে।

অ্যামনেস্টি জানায়, বোকো হারাম জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনার সময় নাইজেরিয়ান সেনাবাহিনী মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে নিজেদের জড়িয়ে ফেলে।

এ সময় তারা বেসামরিক জনগোষ্ঠীর ওপর ধর্ষণ, নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করে। নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনী ও সিভিলিয়ান জয়েন্ট টাস্কফোর্সের (জেটিএফ) সদস্যরা বোকা হারামের হাতে বন্দি নারীদের উদ্ধার করে তাদের স্বামী-পরিবার থেকে আলাদা করে। এসব নারীকে প্রত্যন্ত একটি আশ্রয়শিবিরে নিয়ে রাখা হয়। খাদ্যের বিনিময়ে তাদেরকে ধর্ষণ করেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

অ্যামনেস্টির নাইজেরিয়ার পরিচালক ওসাই ওজিঙ্গো বলেন, এটা খুবই হতাশার যে বোকা হারামের কাছ থেকে নির্যাতিত হয়ে নারীরা সেনাবাহিনীর হাতে আবারও ধর্ষণের শিকার হন।

নাইজেরিয়ার সামরিক বাহিনী এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে। এক বিবৃতিতে বলা হয়, সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্যপ্রমাণের বানোয়াট উপস্থাপনের মাধ্যমে নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থাটি জানায়, সামরিক অভিযানের সময় সেনাবাহিনী ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালনা করেছে এবং বাড়িঘরগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেয়ার পর পলায়নরত মানুষের ওপরে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে।

পাঁচ নারী অ্যামনেস্টিকে বলেছেন, ২০১৫ সালের শেষ দিকে এবং ২০১৬ সালের প্রথমদিকে তারা বামা হাসপাতাল ক্যাম্পের ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ক্ষুধার সুযোগ নিয়ে সেনাবাহনী তাদের ওপর বর্বরতা চালায়। ২০ বছর বয়সী আমা (ছদ্মনাম) বলেন, সেনা সদস্যরা ভোররাতে ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে খাবার নিয়ে আসত। পরের দিন পানি দেয়ার নামে অন্য এক জায়গায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করত।

Post a Comment

Previous Post Next Post