রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধান চায় চীন


অনলাইন ডেস্কঃ চীন রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধান প্রত্যাশা করে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সফররত একটি চীনা প্রতিনিধিদল। চায়নিজ পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্সের (সিপিপিসিসি) পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট কং কুউয়ানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের দলটি গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবনে ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতে এ কথা জানায়।

প্রধানমন্ত্রীর ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ উপাধির বিষয়টি উল্লেখ করে ডেপুটি স্পিকার বলেন, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের প্রধানমন্ত্রী মানবিক বিবেচনায় আশ্রয় দিয়েছেন। এ সংকট মোকাবেলায় মিয়ানমারের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে তিনি চীনের ভূমিকার আহ্বান জানান। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের নিজ বাসভূমিতে ফিরিয়ে নিতে তিনি মিয়ানমারের ওপর চীনের চাপ প্রত্যাশা করেন। 

সিপিপিসিসির পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট কং কুউয়ান বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি জটিল বিষয়। জাতিগত ও নৃতাত্ত্বিক এই সমস্যার বিষয়ে চীন অবগত রয়েছে এবং এ বিষয়ে চীনের একটি পর্যালোচনাও রয়েছে। তিনি বলেন, চীনও চায় এ সমস্যার দ্রুত সমাধান হোক। তবে সমস্যাটি মিয়ানমার ও বাংলাদেশের। এই দুই দেশ মিলে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব দিলে চীনা তা বিবেচনা করবে।

রোহিঙ্গা সমস্যাকে একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা হিসেবে অভিহিত করে ডেপুটি স্পিকার এ সমস্যা সমাধানে কফি আনান কমিশনের সুপারিশের বিষয়েও চীনা প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেন। চীনা প্রতিনিধিদলের সদস্যরা আশ্বাস দিয়েছেন, তাঁরা দেশে ফিরে গিয়ে সরকারের কাছে বিষয়টি তুলে ধরবেন।

সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জু, সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব ড. আব্দুর রব হাওলাদারসহ সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ডেপুটি স্পিকার চীনের প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের কার্যাবলি এবং সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় জাতীয় সংসদের ভূমিকা সম্পর্কে অবহিত করেন।

কং কুউয়ান বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ সফরে এসে বুঝতে পারছি যে বাংলাদেশ খুব সুন্দর একটি দেশ এবং বাংলাদেশের মানুষ খুব অতিথিপরায়ণ। বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বন্ধন দিন দিন আরো দৃঢ় হবে।’ তিনি বলেন, তাঁর দেশের চেতনাকে তিনি বাংলাদেশের কাছে তুলে ধরার জন্য এসেছেন। এখানে এসে তিনি বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নের বিভিন্ন দিক দেখেছেন এবং মুগ্ধ হয়েছেন।

উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখার জন্য চীন এ দেশের যোগাযোগ, তথ্য-প্রযুক্তি, বাণিজ্য সম্প্রসারণসহ নানা খাতে সহযোগিতা আরো জোরদার করতে চায় বলে জানান কং কুউয়ান। বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরো জোরদার হবে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে পছন্দ করে এবং যেকোনো সহযোগিতায় চীন বাংলাদেশের পাশে থাকবে। 

ডেপুটি স্পিকার বলেন, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। আর তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নের শিখরে তুলে নিতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ এরই মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পৌঁছে গেছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post