অনলাইন ডেস্কঃ যুদ্ধের পর পড়ে থাকা স্থলমাইনের আঘাতে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ হারিয়েছেন ইরাকের জুরফ আল-মিল গ্রামের শত শত বাসিন্দা৷ ফলে গ্রামটি এখন পঙ্গুদের গ্রাম নামে পরিচিত৷
১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত যুদ্ধে লিপ্ত ছিল ইরাক আর ইরান৷ সেই সময় হতাহতের ঘটনা তো ঘটেছেই, তবে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরও মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে৷ হারাতে হয়েছে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ৷
ইরাকের বসরা শহরের পূর্বের একটি গ্রাম জুরফ আল-মিল৷ তবে সেখানে অঙ্গপ্রত্যঙ্গহীন মানুষের সংখ্যা এত বেশি যে, স্থানীয়ভাবে সেটি ‘আল বিট্রান’ নামে পরিচিত পেয়েছে৷ আল বিট্রান মানে হচ্ছে- পঙ্গু৷
যুদ্ধের সময় ইরানিরা বিমান থেকে গ্রামটিতে বোমাবর্ষণ করলে অনেকে পালিয়ে অন্য জায়গায় চলে গিয়েছিলেন৷ পরে ফিরে আসেন৷ তবে তারা জানতেন না যে, তাদের গ্রামের আশপাশে স্থলমাইন পোঁতা আছে৷ ফলে অনেক গ্রামবাসী মেষ চরাতে গিয়ে এসব মাইনের বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন৷
যুদ্ধের পর গ্রামবাসী তাদের এলাকায় বেশ কিছু সামরিক কামান, বন্দুক ইত্যাদি পড়ে থাকতে দেখেন৷ ১৯৯১ সালে কুয়েত দখল করার কারণে ইরাকের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা নেমে এলে দারিদ্র্য দেখা দেয়৷ তখন গ্রামবাসী পড়ে থাকা ওই সামরিক সরঞ্জামাদির অংশবিশেষ সংগ্রহ করে সেগুলো বিক্রি করে জীবন চালাতেন৷ কিন্তু তা করতে গিয়েও অনেকে হাত-পা হারান৷
দক্ষিণ ইরাকে পঙ্গুদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক রেডক্রসের সহায়তায় ১৯৯৫ সালে সেখানে কৃত্রিম হাত-পা তৈরির একটি ওয়ার্কশপ চালু হয়৷ সেখানে আল বিট্রান গ্রামের পঙ্গু ছাড়াও অন্যান্য কারণে পঙ্গু হওয়াদের জন্যও কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বানানো হয়৷
বহু বছর পর একটি আধাসামরিক শিয়াবাহিনী বুলডোজার ও অন্যান্য বিশেষ যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে আল বিট্রানের আশপাশের এলাকা মাইনমুক্ত করার কাজ শুরু করেছে৷ সূত্র : ডয়েচে ভেলে।
