অনলাইন ডেস্কঃ সৌদি আরবে নিয়োগকর্তার নির্যাতন ও দুর্ব্যবহারের মুখে আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছে বাংলাদেশি নারী গৃহকর্মীরা। এমন অবস্থায় গৃহকর্মীদের জন্য ‘সেফ হাউস’ বা আশ্রয় কেন্দ্র খুলতে বাধ্য হচ্ছেন বাংলাদেশের কূটনীতিকরা। সৌদি আরবস্থ বাংলাদেশ দূতবাসের ফাঁস হওয়া এক নথিতে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে মিডল ইস্ট আই অনলাইনের এক খবরে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে যাওয়া গৃহকর্মীদের ভয়াবহ অবস্থা উঠে এসেছে ওই প্রতিবেদনে।
গতকাল শনিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিয়োগকারীদের মাধ্যমে যৌন ও শারীরিকভাবে নিপীড়নের শিকার হয়ে শত শত নারী কাজ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। কূটনীতিকরা ওই নথিতে বলেছেন, আমাদের কাছে আসা গৃহকর্মীরা অসুস্থ এবং নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়ে সেফ হাউসে আশ্রয় খুঁজছে। ২০১৫ সালে লেখা ওই মেমো’তে বলা হয়েছে, প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে চার জন নারী গৃহকর্মী আশ্রয় নিতে আসছে। এ অবস্থায় কূটনীতিকদের গৃহকর্মীদের সহায়তায় একজন নারী কাউন্সেলর নিয়োগ দেওয়ার আহ্বান জানান। বেশির ভাগ নারী কর্মীর কাছেই পাসপোর্ট নেই। কারণ এখানে আসার নিয়োগ কর্তারা তাদের পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেন। যাতে করে তারা সৌদি আরব ছেড়ে যেতে না পারে। দূতাবাস কর্মকর্তারা আশ্রয় কেন্দ্রে আরও আসন বৃদ্ধি ও সিসিটিভি-সিস্টেম পাঠানোর অনুরোধ করেন। আশ্রয় প্রার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সৌদিতে এ ধরনের আশ্রয় কেন্দ্র করার আহ্বান জানানো হয়। ২০১৭ সালের তথ্য অনুযায়ী, জেদ্দা এবং রিয়াদে অন্তত ২৫০ জন নারী আশ্রয় কেন্দ্রে ছিলেন।
গত চার বছরে সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মী যাওয়ার সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৭ বছরে ৫ হাজারের কিছু বেশি নারী সৌদি গিয়েছিলেন। এরপর ২০১৫ সালে যান ২১ হাজার জন, ২০১৬-তে ৬৮ হাজার, ২০১৭-তে ৮৩ হাজার। আর চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে গেছেন ১৬ হাজারের বেশি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্তব্য চাওয়া হলেও তা প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।