রোহিঙ্গাদের সহিংস রূপে শঙ্কিত স্থানীয়রা



অনলাইন ডেস্কঃ মানবিক সহায়তা-সহানুভূতি পেলেও কক্সবাজারে আশ্রিত রোহিঙ্গারা দিন দিন সহিংস হয়ে উঠছে। হত্যা, চুরি-ডাকাতিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে তারা। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের হাতে হামলার শিকার হয়েছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনও। এতে রোহিঙ্গাদের নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্বেগ বাড়ছে।

তারা জানান, শনিবার রামুতে রোহিঙ্গা যুবকের দায়ের কোপে বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু, এর আগের দিন রাতে উখিয়ায় নলকূপ স্থাপনকর্মী পাঁচ বাংলাদেশিকে মারধর এবং ক্যাম্পে ডাকাতিকালে সশস্ত্র রোহিঙ্গা আটকের ঘটনায় তারা শঙ্কিত। উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, আশ্রয়ের দুই মাসের মাথায় তারা এক পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলা চালিয়েছে। তাহলে আমাদের কী অবস্থা হবে।

জানা গেছে, শনিবার সকালে কক্সবাজারের রামুর খুনিয়াপালং হেডম্যানপাড়ায় আবদুল জব্বার নামে স্থানীয় এক যুবককে গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে রোহিঙ্গা যুবক হাফেজ জিয়াবুল মোস্তফা। পুলিশ এ ঘটনায় মোস্তফা এবং তার ফুফু ভেলুয়ারা বেগমকে আটক করেছে। নিহত জব্বার রামুর খুনিয়াপালংয়ের কালুয়ারখালীর হেডম্যান বশির আহম্মদের ছেলে।

এর আগে শুক্রবার রাতে উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের হামলায় ৫ বাংলাদেশি গুরুতর আহত হন। একই রাতে ডাকাতির চেষ্টার ঘটনায় ১০ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে ৫ জনকে রোহিঙ্গারাই আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে। পরে শনিবার অভিযান চালিয়ে আরও ৫ জনকে অস্ত্রসহ আটক করা হয়।

১৭ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গাদের হামলায় উখিয়ার পালংখালী এলাকার মুরগির খামার মালিক জমির উদ্দিন আহত হন। এর আগের দিন উখিয়ার কুতুপালং এলাকায় রোহিঙ্গাদের হামলায় রোহিঙ্গা খুনের ঘটনা ঘটে। ৭ অক্টোবর কুতুপালংয়ের রোহিঙ্গা বস্তি লাগোয়া খাল থেকে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ৮ অক্টোবর কুতুপালংয়ে ত্রাণের টোকেন বিতরণ করতে গিয়ে মুক্তি নামের এক এনজিও কর্মী রোহিঙ্গাদের কবল থেকে বাঁচতে গাছে ওঠে পড়েন। ১৯ অক্টোবর মহিষ বিক্রিকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা মোহাম্মদ হোছনের ছেলে ধলাইয়া ও কালাইয়া স্থানীয় আবু ছিদ্দিককে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে।

পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ২১ অক্টোবর টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-ব্লকে রোহিঙ্গা নারী দিল বাহার ও তার স্বামী সৈয়দ আহমদ অবৈধভাবে একটি মুদির দোকান স্থাপন করার চেষ্টা করে। ক্যাম্পের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কবির আহমদ বাধা দিলে তার ওপর হামলা চালায় রোহিঙ্গা দম্পতি।

উখিয়ার পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দীন চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গাদের ভারে উখিয়া-টেকনাফ যেন নুয়ে পড়েছে। এতে স্থানীয় লোকজনের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। টেকনাফ থানার ওসি মো. মাইন উদ্দিন খান বলেন, আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তায় কাজ করতে গিয়ে পুলিশের হিমশিম খাওয়ার মতো অবস্থা। তার ওপর হামলার শিকার হতে হচ্ছে পুলিশকেই।

Post a Comment

Previous Post Next Post