জুড়ীর জাম্বুরায় কৃষকের ভাগ্যবদল



বিশেষ প্রতিনিধিঃ চলতি মৌসুমে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় বাতাবি লেবুর বাম্পার ফলনে, সৌখিন কৃষকদের মুখে ফুটছে তৃপ্তির হাসি। বাতাবি লেবু বা জাম্বুরা চাষাবাদের মধ্য দিয়ে আত্মনির্ভশীল হওয়ার পথ খুঁজে পেয়েছেন চাষীরা। তাদের ভাগ্য খুলেছে, পরিবারে এসেছে সচ্ছলতা, হয়েছে দিন বদল। তাদের উৎপাদিত জাম্বুরা মানসম্মত হওয়ায় চট্রগ্রামসহ চাহিদা রয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও। বাতাবি লেবু বা জাম্বুরা ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ বাংলাদেশের একটি সুপরিচিত গ্রামীণ ফল। বাতাবি লেবু গ্রামীণ জনপদের পাহাড়ি অঞ্চলের টিলাগুলোতে ফলন ভালোহয়। তবে বেশির ভাগই বসতবাড়ি, স্কুল-কলেজের আশপাশে পতিত জায়গায় বাতাবি লেবুর চাষ করা হচ্ছে। অন্যান্য ফলের তুলনায় এটি যেমন দামে সস্তা, তেমন পুষ্টিতেও ভরপুর। টক-মিষ্টি এফলটি লবণ-মরিচ দিয়ে মাখিয়ে খেতে ভীষণ ভালো লাগে। জাম্বুরা লেবু গোত্রের ফল হলেও স্বাদ অনেকটা আঙুরের মতো ! জাম্বুরা ফল হিসেবে যেমন চমত্কার তেমনি এর পুষ্টিগুণও ব্যাপক। আশিন থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত এ ফল গাছে গাছে দোলতে থাকে। তবে সবচেয়ে বেশি পাঁকা হয় আশিন ও কার্তিক মাসে মাঝামাঝি সময়ে–এমনটাই জানিয়েছেন চাষিরা। সঠিকভাবে পরিচর্যা করলেপ্রতি হেক্টর ১৫ থেকে ২০ মেট্রিকটন বাতাবি লেবু উৎপাদন করা সম্ভব। যা বিক্রয় করে পরিবারের আর্থিক অবস্থা স্বচ্ছল করা সম্ভব।


উপজেলা কৃষি সূত্র জানিয়েছে, জুড়ী উপজেলার হায়াছড়া, শুকনাছড়া, জামকান্দি, দূর্গাপুর, গৌবিন্দপুর, বিনোন্দপুর, লালছড়া, রোপাছড়া, লাঠিটিলা, কচুরগুল, কুচাইতল, পুটিছড়াসহ বিভিন্ন গ্রামেরটিলাবাড়ি বা বসতবাড়ির আশপাশের ৬.৫ হেক্টর জমিতে প্রায় ১০ হাজার জাম্বুরা গাছ, ১৩ শ কৃষক চাষাবাদ করছেন। প্রতি গাছ থেকে ২০০-৫০০ টি জাম্বুরার ফলন হয়েছে। এগুলো বেশির ভাগইস্থানীয় জাতের। চাষিরা অন্যান্য ফসলাধির পাশাপাশি বাতাবি লেবু চাষাবাদে অত্রাঞ্চলের আগ্রহ ও উৎসাহ দেখাচ্ছে। হায়াছড়া গ্রামের ইব্রাহিম আলী ও মঈন উদ্দিন, শুকনাছড়া গ্রামের জুবায়েরআহমদ, পুটিছড়া গ্রামের আব্দুল খালিক ও রোপাছড়া গ্রামের বাবুল মিয়া জানান, যদি জাম্বুরা চাষে স্থানীয় বাজারে উপযুক্ত দাম পাওয়া যেত, তাহলে এ চাষাবাদে আরো অনেকেই আগ্রহী হতেন। স্থানীয় বাজারে পাইকারি বিক্রি করতে গেলে প্রতিটি জাম্বুরা ৭ থেকে ১০ টাকার বেশি বিক্রি করা যায় না। আবার পাইকারদের কাছে থেকে ক্রেতারা ২৫ থেকে ৩০ টাকার কমে কিনতে পারেন না।যার ফলে চাষীদের চেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন, পাইকারি ক্রেতারা। তারা বলেন, জুড়ী বাজার ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায়, চট্রগ্রামে বিক্রি করতে নিয়ে যাই। সেখানে জাম্বুরার ভালো চাহিদা রয়েছে।ভালো দামও পাওয়া যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবল সরকার জানান, কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পেতে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আগামি বছরগুলোতে আরো ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। ভালো ফলনের জন্য কৃষকদেরপ্রশিক্ষণসহ সকল ধরনের সহযোগীতা করা হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post