কুলাউড়ায় মনু নদীর ভাঙনে হুমকিতে কাউকাপন বাজার

কুলাউড়ায় মনু নদের ভাঙনে হুমকিতে কাউকাপন বাজার



বিশেষ প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় মনু নদীর ভাঙনে প্রাচীনতম কাউকাপন বাজার হুমকির মুখে পড়েছে। উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে সম্প্রতি ভাঙনে বাজারের ১২টি দোকান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখনো হুমকির মুখে রয়েছে আরও ১৫-২০টি দোকান ।

এলাকাবাসী জানান, ২০০৩ সালের দিকে কাউকাপন বাজারে ভাঙন শুরু হয়। জুন মাসে বন্যায় এ ভাঙন প্রকট আকার ধারণ করে। এর ফলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতংকের সৃষ্টি হয়। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ২৮ আগস্ট মৌলভীবাজার-২ আসনের সাংসদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর লিখিত আবেদন দেওয়া হয়।
সরেজমিনে  সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দেখা গেছে, কুলাউড়া-শমশেরনগর সড়কের কুনিমোড়া যাত্রীছাউনি থেকে তারাপাশামুখী সড়কের মধ্যে কাউকাপন বাজারটির অবস্থান। সড়কের দুই পাশে বেশ কিছু দোকানপাট। পূর্ব পাশে নদীর পাড় ঘেঁষে থাকা দোকানগুলোই বেশি ঝুঁকিতে।

স্থানীয় পলকিরপার গ্রামের বাসিন্দা রফিক মিয়া বলেন, বাজারে তাঁর একটি বিপনী রয়েছে। জুন মাসে ভাঙনে ওই বিপনীর ১২টি দোকানের মধ্যে ১০টি নদীগর্ভে চলে গেছে। তবে ব্যবসায়ী টের পেয়ে মালপত্র আগেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ফেলেন।


কাউকাপন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি পরিমল দে বলেন, বাজারটি শতাধিক বছরের পুরোনো। ১০-১২ বছরে বাজারের পূর্ব পাশের ৩০টি দোকান ধসে গেছে। এখন আরও ১৫-২০টি দোকান হুমকির মুখে। এ পরিস্থিতিতে অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। ভাঙন রোধে দ্রুত কোনো ব্যবস্থা না নিলে পূর্ব পাশের কোনো দোকান রক্ষা করা সম্ভব হবে না। এ ছাড়া ভাঙন বাড়লে পাকা সড়কটিও এক সময় নদীগর্ভে বিলীনের আশংকা রয়েছে।


হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল বাছিত বলেন, মনু নদের ভাঙনের কবল থেকে কাউকাপন বাজারটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে তিনি উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন মাসিক সভায় একাধিকবার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু, এখনো কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।


পাউবোর মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শংকর চক্রবর্তী মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে মুঠোফোনে বলেন, ‘আমাদের লোকজন কিছু দিন আগে কাউকাপন বাজারে গিয়ে ভাঙনের অবস্থা দেখে এসেছেন। কিন্তু, সেখানে কাজ করানোর জন্য কোনো অর্থবরাদ্দ নেই। আপাতত বালু ও সিমেন্ট মিশ্রন করে ব্যাগে ভরে ওই জায়গায় ফেললে ভাঙন রোধ করা সম্ভব। এ কাজে বেশ টাকা লাগবে। স্থানীয় এমপি (সাংসদ) মহোদয়কে মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দের ব্যবস্থা করে দিতে অনুরোধ করেছি।’
সাংসদ আবদুল মতিন মুঠোফোনে বলেন, তিনি বরাদ্দের ব্যাপারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এখনো মেলেনি।

Post a Comment

Previous Post Next Post