বিশেষ প্রতিনিধি: কুলাউড়া উপজেলার ব্রাম্মনবাজার ইউনিয়নের কোনাগাওয়ে জঙ্গি নেতা দেলোয়ার হোসেন রিপনের কবর স্থানের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জঙ্গি রিপনের দাফন তার পারিবারিক কবরস্থান কোনাগাও জামে মসজিদের সামনে তাকে দাফন করা হবে।
বুধবার ১২ এপ্রিল রিপনের ৯ একর জুড়ে বিশাল বাড়ীতে বিরাজ করছে সুনসান
নীরবতা। বাড়ীতে পাওয়া যায়নি পরিবারের দায়িত্বশীল কাউকে। পরিবারের সবাই
রিপনের সাথে শেষ সাক্ষাতের জন্য সিলেট কেন্দ্রিয় কারাগারে গেছেন। বাড়ীতে
নিরাপত্তাজনিত কারণে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ। এলাকা জুড়ে বিরাজ করছে শুনসান
নীরবতা। পুলিশি তৎপরতার কারণে ভয়ে আশপাশের কেউ বের হচ্ছেন না বাড়ী থেকে।
ভয়ে রিপনের বাড়ীতে যাচ্ছেন না কেউ। সবাই আতঙ্কগ্রস্থ।
কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের কোনগাঁও গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত
প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক আবু ইউসুফ ও শেলী বেগমের ৪ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে
রিপন সবচেয়ে বড়। মেধাবী শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন রিপন ১৯৯৬ সালে স্থানীয়
ব্রাক্ষণবাজার জালালাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাশ
করে। সিলেট মদনমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন। সেখানেও
সে কৃতিত্বের সাথে শিক্ষাজীবন চালিয়ে যাচ্ছিল হঠাৎ করে বদলে যায় সে।
তৎকালীন জেএমবি নেতা শায়খ আব্দুর রহমান ওরফে বাংলা ভাই ও মুফতি হান্নানের
কানেকশনে হয়ে উঠে দুদুর্ষ জঙ্গি। এলাকার লোকজন জানান, তৎকালীন সময়ে শায়খ
আব্দুর রহমান ওরফে বাংলা ভাই রিপনের বাড়ীতে এসেছিলেন
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হজরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন পুলিশের এএসআই কামাল উদ্দিন।
এছাড়া হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া। এ ঘটনায় আহত হন আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের তৎকালীন জেলা প্রশাসক আবুল হোসেনসহ অন্তত ৪০ জন।
আলোচিত এ মামলার রায়ে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের রায়ে হরকাতুল জিহাদের প্রধান মুফতি হান্নান, সাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেয়া হয়। এই রায় আপিলেও বহাল থাকে।
আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন। তাদের আবেদন গত ১৯ মার্চ সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ হয়ে যায়।
এরপর এই তিন আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে নিজেদের জঙ্গি স্বীকার করে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতি তাদের আবেদন নাকচ করে দেন।