শিশু রাজন হত্যায় ৪ জনের ফাঁসি বহাল

শিশু রাজন হত্যায় ৪ জনের ফাঁসি বহাল
অনলাইন ডেস্কঃ শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলায় সৌদি প্রবাসী কামরুল ইসলামসহ চার আসামিকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ফাঁসির রায় বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। বাকি ছয় আসামির বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করবে। মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স) ও আসামিদের আপিলের শুনানি শেষে ১২ মার্চ হাইকোর্টের এই বেঞ্চ রায়ের এই দিন ঠিক করে দেয়।

গত বছরের ১০ নভেম্বর রাজন হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে এসে পৌঁছায়। পরে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়। ৩০ জানুয়ারি শুনানি শুরু হয়। মোট ১৯ দিন শুনানি শেষে রায় ঘোষণার এদিন ধার্য করেন আদালত।

সাধারণত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির রায় কার্যকরের আগে হাইকোর্টের অনুমতির প্রয়োজন হয়। যা ডেথ রেফারেন্স নামে পরিচিত। ডেথ রেফারেন্সের পাশাপাশি বিচারিক আদালতের ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল দায়ের করেন।

২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর রাজন হত্যা মমালায় আসামি কামরুলসহ চারজনকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। ওই বছরের ৮ জুলাই চুরির অপবাদে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন শেখপাড়ায় নির্যাতন করে হত্যা করা হয় সিলেটের জালালাবাদ থানা এলাকার বাদেয়ালি গ্রামের সবজি বিক্রেতা শিশু রাজনকে। লাশ গুম করার সময় ধরা পড়েন একজন। পরে পুলিশ বাদী হয়ে জালালাবাদ থানায় মামলা করেন। ফেসবুকে প্রচারের উদ্দেশে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ধারণ করে নির্যাতনকারীরা।

রাজন হত্যার দেড় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে গত বছর ১৬ আগস্ট ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুরঞ্জিত তালুকদার।

মাত্র ১৭ কার্যদিবসে বিচারিক কার্যক্রম শেষ করে সিলেটের মহানগর দায়রা জজ আদালত ২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর রায় ঘোষিত হয়। রায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া একজনের যাবজ্জীবনসহ পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। আসামিদের মধ্যে কামরুল ইসলাম, ময়না চৌকিদার, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল ও জাকির হোসেন পাভেল আহমদের ফাঁসির আদেশ হয়।

যাবজ্জীবন হওয়া নূর মিয়া প্রধান আসামী কামরুলের অন্যতম সহযোগী যিনি রাজনকে নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও করেন, তারপর ছড়িয়ে দেন ইন্টারনেটে। কামরুলের তিন ভাই মুহিত আলম, আলী হায়দার ও শামীম আহমদকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেয় আদালত। দুলাল আহমদ ও আয়াজ আলীর দণ্ড হয় এক বছর করে।আসামিদের মধ্যে জাকির হোসেন পাভেল এবং কামরুলের ভাই শামীম আহমদ মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

রাষ্ট্রপক্ষে হাই কোর্টে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল ইসলাম ও নিজামুল হক নিজাম। আসামিপক্ষে ছিলেন এস এম আবুল হোসেন, বেলায়েত হোসেন, মো. শাহরিয়ার ও শহীদ উদ্দিন চৌধুরী। এছাড়া পলাতক দুই আসামির পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হাসনা বেগম।

Post a Comment

Previous Post Next Post