জঙ্গি রিপনের ফাসি, এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা !

জঙ্গি রিপনের ফাসি, এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা  !
অনলাইন ডেস্কঃ জোরদার করা হয়েছে কারাগারের নিরাপত্তা, প্রস্তুত রাখা হয়েছে জল্লাদ ও ফাঁসির মঞ্চ। এবার শুধু সময়ের অপেক্ষা। উচ্চপর্যায় থেকে নির্দেশনা এলেই ফাঁসিতে ঝুলিয়ে কার্যকর করা হবে জঙ্গি দেলওয়ার ওরফে রিপনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ। মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রপতির কাছে রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার চিঠি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছার পরই শুরু হয় ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুতি।

সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রিপনকে রাখা হয়েছে কনডেম সেলে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় তার প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার চিঠি কারাগারে এসে পৌঁছায়। পরে তা রিপনকে পড়ে শোনায় কারা কর্তৃপক্ষ। রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার চিঠি পাওয়ার পর থেকেই ফাঁসি কাযর্কর প্রক্রিয়া শুরু করে সিলেট কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ। কারাগারে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়।

কারাগার সূত্র জানায়, রিপনের ফাঁসি কার্যকরের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। একাধিক জল্লাদকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ফাঁসির মঞ্চও প্রস্তুত রয়েছে। রিপনের ফাঁসি কার্যকরের বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার বৈঠকও করেছে। আজ বুধবার রাতের যে কোনো সময় রিপনের ফাঁসি কার্যকর করা হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে একটি সূত্র।

সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. ছগির মিয়া বলেন, ‘রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার চিঠি মঙ্গলবার সকালে পেয়েছি আমরা। পরে তা রিপনকে পড়ে শোনানো হয়েছে। তার ফাঁসি কার্যকরের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্দেশনা পেলেই ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে।’

এদিকে, মঙ্গলবার রিপনের সাথে তার পরিবারের লোকজন দেখা করেছেন। সকাল পৌনে ১১টার দিকে রিপনের মা সমিরুল নেসা মেলি, বাবা আবু ইউসুফ, ভাই শামসুল মোহাম্মদ শিপন ও ভাবি সামিয়া উর্মি কারাগারের ভেতরে ঢুকেন। প্রায় আধা ঘন্টা রিপনের সাথে দেখা করার পর বেরিয়ে আসেন তারা। এ সময় রিপনের বাবা আবু ইউসুফ বলেন, ‘টেলিভিশনের মাধ্যমে রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার বিষয়টি জেনেছি আমরা। এ খবরে রিপনকে দেখতে এসেছি।’

কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. ছগির মিয়া বলেন, ‘রিপনের পরিবার স্বেচ্ছায় দেখা করে গেছে। কারা কর্তৃপক্ষ তাদেরকে কোনো বার্তা পাঠায়নি। ফাঁসির রায় কার্যকরের আগে নিয়ম অনুযায়ী পরিবারের সদস্যরা আরেকবার দেখা করার সুযোগ পাবেন।’

প্রসঙ্গত, সিলেটে শাহজালাল (রহ.) এর মাজারের প্রধান ফটকে ২০০৪ সালের ২১ মে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপর গ্রেনেড হামলা হয়। হামলায় তিন জন নিহত ও আহত হন ৭০ জন। এ ঘটনার মামলায় ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল ওরফে বিপুল, দেলওয়ার ওরফে রিপনকে মৃত্যুদ- এবং মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন  দেন সিলেট দ্রুত বিচার আদালত।

রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদ-প্রাপ্তরা আপিল করলেও পূর্বোক্ত রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট। পরে আসামিদের আপিল গত ৭ ডিসেম্বর খারিজ হওয়ার পর ১৭ জানুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি আসামিরা রিভিউ আবেদন করলে ১৯ মার্চ তা খারিজ হয়। গত ২১ মার্চ রিভিউ খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। পরদিন মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল এবং দেলওয়ার ওরফে রিপনের রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে এসে পৌঁছায়। গত ২৭ মার্চ রিপন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুফতি হান্নান ও শরীফ শাহেদুল আলম কাশিমপুর কারাগারে বন্দী রয়েছেন। সুত্রঃ সিলেটভিউ

Post a Comment

Previous Post Next Post