যে কোন সময় ঘটতে পারে মেগাথ্রাস্ট; মাত্রা হবে ৮.২-৯.০; বিপদসীমায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষ
অনলাইন ডেস্কঃ যুগে
যুগে নানা দেশে প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পের কারণে পরিবর্তিত হয়েছে জনপদ, গতিপথ
পাল্টেছে নদনদী, ধ্বংস হয়েছে সভ্যতা। তেমনি এক ভয়াবহ প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প বা
মেগাথ্রাস্টের হুমকির মুখে রয়েছে সিলেট-চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের বড় একটি
অঞ্চল, ভারতের আসাম-মিজোরাম-ত্রিপুরা রাজ্য ও মায়ানমায়ের কিছু অংশ।
গত বছরের জুলাই মাসে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়, বৃহত্তর এ অঞ্চলের নিচে ধীরে ধীরে সক্রিয় হচ্ছে একটি ফল্ট লাইন, যা ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প ঘটাবে যে কোন মুহূর্তে।
এ
ভূমিকম্পের ফলে ঘনবসতিপূর্ণ এ অঞ্চলের কোটি মানুষের জীবন হুমকির সামনে
রয়েছে বলে মন্তব্য গবেষকদের। এছাড়াও এ ভূমিকম্পে পাল্টে যেতে পারে বৃহত্তর এ
অঞ্চলের ভূতাত্ত্বিক প্রকৃতি।
গত ১১
জুলাই ন্যাচার জিওসায়েন্সে গবেষণাপত্র প্রকাশের পর গবেষণাটির সহ-গবেষক
কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির ল্যামন-ডোহার্টি আর্থ অবজারভেটরির ভূতাত্ত্বিক
গবেষক মাইকেল স্টেকলার বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানান, “এটা নিশ্চিত যে এ অঞ্চলে
একটি প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প ঘটবেই, তবে তার সময় নির্ধারিত নয়। এটি যে কোন
মুহূর্তে ঘটতে পারে, আবার ৫০০ বছর পরেও ঘটতে পারে”।
একই সময়ে ভারতের এই সময়কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে গবেষনাটির সহ-গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আক্তার
বলেন, “আমরা দশ বছর ধরে এই কথা বলে চলেছি। এতদিনে পরিসংখ্যান হাতে পাওয়ার
পর নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি। আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি ৮.২-৯.০ তীব্রতার
ভূমিকম্প হতেই পারে”।
নতুন এই
গবেষণা নিয়ে ভূতাত্ত্বিকদের বক্তব্য, ইন্দো-বাংলা রেঞ্জের এই অংশ মোটেই
‘টিপিক্যাল সাবডাকশন জোন’ নয়। সুমাত্রা, জাপান, চিলি, আলাস্কা যার প্রকৃত
উদাহরণ। তবে তাদের দাবির সাথে দ্বিমত পোষণ করেন গবেষক হুমায়ুন আক্তার।
তিনি
বলেন, “ভারতীয় প্লেট ও বার্মা প্লেটের সংযোগস্থল বাংলাদেশের নিচ দিয়েই
গেছে। এটাই আমাদের পরীক্ষায় বেরিয়ে এসেছে। এই অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠের ১০-১৫
কিলোমিটার নীচে ভারতীয় প্লেট পূবের দিকে তলিয়ে যাচ্ছে। উপরে উঠে আসছে
বার্মা প্লেট। এই ঘষাঘষির ফলে প্রচুর শক্তি সঞ্চিত হচ্ছে। মেগাথ্রাস্ট বা
প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পের কারণ হবে সেটাই”।
তথ্যসূত্র: নেচার জিওসায়েন্স, সিএনএন, ডেইলিমেইল, এইসময়
