এস আলম সুমন:
সিলেট-আখাউড়া রেলপথের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল রেলওয়ে স্টেশনটির সকল
কার্যক্রম সন্ধ্যা হলেই বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তিন মাস ধরে প্রতিদিন সন্ধ্যা
৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত এ রুটে চলাচলকারী আন্তনগর ও লোকাল ট্রেনগুলো
কুলাউড়া থেকে মাইজগাঁও পর্যন্ত ক্রসিং, লাইন ক্লিয়ারেন্স এবং সিগন্যাল ছাড়া
চলাচল করে। এই স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার মারা যাওয়ার পর কোন
নতুন মাস্টার নিয়োগ না দেওয়া লোকবল সংকটে এমন পরিস্থিতির তৈরী হয়েছে।
রেলওয়ে
স্টেশন সূত্রে জানা যায়, কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন থেকে মাইজগাঁও রেলওয়ে
স্টেশনের দুরত্ব ২২ কিলোমিটার। এই স্টেশনগুলো মধ্যবর্তী ভাটেরা, বরমচাল ও
ছকাপন রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ভাটেরা রেলওয়ে স্টেশনটি লোকবল না
থাকায় সেটি দির্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ছকাপন রেলস্টেশনে ডাবল লাইন, লাইন
ক্লিায়ারেন্স ও আধুনিক সিগন্যাল ব্যবস্থা নেই। কুলাউড়া-মাইজগাঁও স্টেশনের
মধ্যবর্তী একমাত্র বরমচাল রেলওয়ে স্টেশনে প্রতিদিনই এ রুটে চলাচলকারী
কয়েকটি ট্রেনের ক্রসিংয়ের ব্যবস্থা করা হত। কিন্তু এই স্টেশনের
দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার হাবিবুরর রহমান গত ৫ আগস্ট মারা যাওয়ার পর
সহকারী স্টেশন মাস্টার মো. শফিকুর রহমান ও একজন পয়েন্টস ম্যান ইউনুছ আলী
দ্বারা প্রায় তিন মাস ধরে শুধুমাত্র ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এটি
চালু থাকে। সন্ধ্যা থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত স্টেশনের সকল কার্যক্রম বন্ধ
থাকে। প্রতিদিন এ রুটে সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত ৬টি আন্ত:নগর ট্রেন এবং
ডেমুসহ ৪ টি লোকাল ট্রেন চলাচল করে। প্রতিদিনই সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত
মাইজগাঁও অথবা কুলাউড়ায় একটি ট্রেনকে দাঁড় করিয়ে রেখে অন্য ট্রেনের ক্রসিং
দেওয়া হয়। এতে করে প্রায়ই প্রতিটি ট্রেনের যাত্রা ৩০ থেকে ৪০ মিনিট সময়
বিলম্ব হয়। তাছাড়া ডেমু, সুরমা মেইল, কুশিয়ারা ও জালালাবাদ ট্রেন কোন
প্রকার সিগন্যাল ও লাইন ক্লিয়ারেন্স ছাড়াই বরমচাল স্টেশনে যাত্রাবিরতি ও
ছেড়ে যায় এবং সন্ধ্যার পর স্টেশন বন্ধ থাকায় লোকাল ট্রেনের টিকেট বিক্রিও
বন্ধ থাকে। এই স্টেশন দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রী বরমচাল ইউপির সদস্য রাজিব
আহমদ, ব্যবসায়ী এনামুল ইসলাম জানান স্টেশন মাস্টারের শুন্য পদে নতুন নিয়োগ
দেওয়া না হলে লোকবল সংকটের কারণে স্টেশনের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে
যাবে। অথচ এই স্টেশন থেকে লোকাল ট্রেনযোগে প্রতিদিনই প্রায় পাঁচ শতাধিক
যাত্রী উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করেন। রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন
কর্তৃপক্ষকে শীঘ্রই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান
তাঁরা।
এ
ব্যাপারে কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার হরিপদ সরকার বলেন, বরমচাল
স্টেশনের দায়িত্ব প্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার মারা যাওয়ার পর একজন সহকারী
স্টেশন মাস্টার ও পয়েন্টসম্যান দ্বারা শুধুমাত্র সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা
পর্যন্ত স্টেশনটির কর্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। রাতে স্টেশনের কার্যক্রম
বন্ধ থাকে। এসময় কুলাউড়া থেকে মাইজগাঁও স্টেশনের সাথে যোগাযোগ করে লাইন
ক্লিায়ারেন্স ও ক্রসিং দেয়া হয়। তিনি আরও বলেন, রেলওয়েতে নতুন লোক নিয়োগ
দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তাঁরা ট্রেনিংয়ে রয়েছেন। আগামী ডিসেম্বর বা জানুয়ারি
মাসে রেলওয়ের শুন্য পদে তাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হবে। তখন বরমচালসহ এ রুটে
বন্ধ থাকা স্টেশনগুলো পুনরায় চালুর ব্যবস্থা করা হবে।