বড়লেখা প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় বাতাসে ছড়াচ্ছে পাকা ধানের ঘ্রাণ। জমিতে জমিতে দোল খাচ্ছে সোনারঙা পাকা, আধা পাকা ধান। প্রকৃতির অপরূপ এ সৌন্দর্যে কৃষকের বুকে যেন অপার আনন্দ। ধান কাটা নিয়ে চারদিকে চলছে নবান্ন উৎসব। সেই উৎসবের ঢেউ লেগেছে উপজেলার কৃষক পরিবারগুলোয়।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আমন ধান কাটার মহোৎসব শুরু হয়েছে। শীতের সকাল থেকে শুরু করে পড়ন্ত বিকাল পর্যন্ত মাঠে-মাঠে ধান কাটা, মাড়াই, বাছাই ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সব কৃষক পরিবার। ধানের ভালো ফলনে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বড়লেখায় চলতি মৌসুমে ৭৮০২ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৭৯০০ হেক্টর জমিতে ধান আবাদ করেন। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩২,৬২৫ মেট্রিক টন ধান। অর্থাৎ ২১, ৭৫০ মেট্রিক টন চাল। তবে ভালো ফলন ও লক্ষ্যমাত্রার অধিক জমিতে চাষাবাদ হওয়ায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে কৃষি বিভাগ আশা করছে।
সদর ইউনিয়নের আদিত্যের মহাল এলাকার কৃষক রিয়াজ উদ্দিন জানান, "এবার ১২ কিয়ার জমিতে ক্ষেত করেছি। খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকার মতো। জমিতে ধান ভালো হয়েছে। দশ-এগারো কাঠা ধান পাবো আশা করি। এবার খরচের টাকা উঠিয়ে ভালো লাভ হবে।"
রাঙ্গাউটি এলাকার কৃষক ইকবাল হোসেন স্বপন জানান, "আমন উৎপাদনে খরচ অনেক কম হয়। কারণ বোরো চাষের মতো বেশি সেচ ও সার দিতে হয় না। পর্যাপ্ত বৃষ্টি আর পরিচর্যা করলেই আমন ফসল ভালো পাওয়া যায়।"
কাঁঠালতলী এলাকার কৃষক নুর উদ্দিন জানান, "কৃষি কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক তদারকি করায় ও অনুকুল আবহাওয়ার কারণে এবার ধানের ফলন খুব ভাল হয়েছে।"
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুতুব উদ্দিন জানান, "কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম, উন্নতমানের বীজ, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার, কৃষকদের প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন প্রদর্শনী স্থাপন ও পার্সিং পদ্ধতির ফলে ফলন ভালো হয়েছে। গত বছরের মতো এবারও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন পাওয়া যাবে।"