ছোট হচ্ছে বুধ, গিলে খেতে পারে সূর্য!

ছোট হচ্ছে বুধ, গিলে খেতে পারে সূর্য!
অনলাইন ডেস্কঃ ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে রক্ত। কুঁচকে, ঝুলে পড়ছে চামড়া। শরীরের বৃদ্ধের ছাপ পরেছে তার। পিঠে ভাঁজ পড়েছে। তৈরি হয়েছে একটি বিশাল উপত্যকা। তবে এ গল্প কোন মানুষের নয়, এটি এক গ্রহের কথা। সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ 'বুধ'র কথা বলছি।

নাহ্, পৃথিবী ছোট হচ্ছে না। তারারা কত আলোকবর্ষ দূরে, তা মাপারও কোন প্রয়োজন এই মুহূর্তে পড়ছে না। আমাদের সাধের এই গ্রহও একই জায়গায় আছে। তবে আমাদেরই প্রতিবেশী গ্রহের খুব বড় বিপদ।

আমাদের বয়স যত বাড়ে, ততই রক্তের জোর কমে। একটি শিশুর শরীরে রক্ত যত গরম থাকে, কোন বৃদ্ধের শরীরে ততটা থাকে না। রক্ত গরম থাকে বলেই শিশুদের শরীর তরতর করে বাড়ে। শিশুদের শরীর বাড়-বৃদ্ধির হার জোয়ানের তুলনায় অনেক বেশি। বুধেরও রক্তের জোর তেমনই কমে যাচ্ছে, খুব দ্রুত।

তার অন্তরের যে গনগনে আঁচ, তা খুব দ্রুত কমে যাচ্ছে। বুধের ভিতরটা উত্তরোত্তর ঠান্ডা মরে যাচ্ছে। ফলে, পূর্ব-পশ্চিম-উত্তর-দক্ষিণ সবদিকেই ছোট হয়ে যাচ্ছে বুধ। তার পিঠে তৈরি হয়েছে এক বিরাট উপত্যকা। যাকে বলা হচ্ছে গ্রেট ভ্যালি। যেটি আমেরিকার অ্যারিজোনায় গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের চেয়েও বড়। গভীরতায় বুধের সেই উপত্যকাটি পূর্ব আফ্রিকার গ্রেট রিফ্ট ভ্যালির চেয়েও বেশি। এটি লম্বায় ৬২০ মাইল (১০০০ কিলোমিটার), চওড়ায় ২৫০ মাইল (৪০০ কিলোমিটার) এবং গভীরতায় ২ মাইল (৩.২ কিলোমিটার)

অনেক আগেই নাসার মেরিনার-টেন মহাকাশযান বুধের পাশ দিয়ে ছুটতে ছুটতে জানিয়েছিল, চেহারায় খাটো বা ছোট হয়ে যাচ্ছে বুধ। ৪৬০ কোটি বছর আগে বুধের জন্মের পর গ্রহটি চেহারায় খাটো হয়েছে ১.২ থেকে ২.৫ মাইল বা দুই থেকে চার কিলোমিটার।

বুধের পাশ দিয়ে ঘুরে এসেছে আরেকটি মহাকাশযান 'মেসেঞ্জার'। তার দেওয়া তথ্য জানাচ্ছে, বুধ চেহারায় খাটো হয়েছে প্রায় ৮.৭ মাইল বা ১৪ কিলোমিটার। একদিন হতেই পারে, বুধ খাটো হতে হতে চেহারায় এত ছোট হয়ে যাবে যে, সূর্যটা তাকে গিলেই খেয়ে নিতে পারে। তখন পৃথিবীর ওপর কোন প্রভাব পড়বে না তো? এ নিয়ে গবেষণায় ব্যস্ত বিজ্ঞানীরা।

Post a Comment

Previous Post Next Post