অনলাইন ডেস্কঃ জালালাবাদ সেনানিবাসে ১১ পদাতিক ব্রিগেডসহ ৯ পদাতিক ইউনিটের পতাকা উত্তোলন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নতুন এ ব্রিগেড ও ইউনিট প্রতিষ্ঠা, সিলেট অঞ্চলের অবকাঠামো, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন প্রাণ সৃষ্টি করেছে। সিলেটে সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের উন্নয়ন ওই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে আশা জাগিয়েছে এবং সেনা সদস্যদের কাছে তাদের প্রত্যাশা বেড়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) সিলেট সফরকালে জালালাবাদ সেনানিবাসে ১৭ পদাতিক ডিভিশনের ১১ পদাতিক ব্রিগেড ও ৯ ইউনিটের পতাকা উত্তোলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০১৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সিলেটে সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের যাত্রা শুরু হয়। তিন বছরের মাথায় এ ডিভিশনের অধীনে একটি নতুন পদাতিক ব্রিগেডসহ নয়টি ইউনিটের গোড়াপত্তন করা সম্ভব হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী ‘অভিভূত’ হয়ে বলেন, “১৭ পদাতিক ডিভিশনের উন্নয়ন এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে আশা জাগাচ্ছে এবং আপনাদের কাছে তাদের প্রত্যাশা বেড়েছে।” দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্রিগেড পর্যায়ে স্পেশাল ফোর্স গঠনের বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা।
নতুন এই ব্রিগেড ও ইউনিটগুলোর ‘বিক্রমশালী’ প্রতিটি সদস্য দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে এ ডিভিশনের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সেনাবহিনীর উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন। বঙ্গবন্ধু উন্নত ও পেশাদার সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে ১৯৭৪ সালেই প্রতিরক্ষা নীতিতে দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন জানিয়ে পিতার বক্তৃতা থেকে কিছু অংশ উদ্ধৃত করেন শেখ হাসিনা।
ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর আওতায় তিন বাহিনীর পুনর্গঠন ও আধুনিকায়নের কার্যক্রমগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “১৯৭৪ সালে জাতির পিতার সুদূরপ্রসারী ওই প্রতিরক্ষা নির্দেশনার আলোকেই আমরা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে একটি জ্ঞানভিত্তিক পেশাদার বাহিনী হিসাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলাম। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে আমরা সেনাবাহিনীর অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি প্রতিটি সদস্যের নৈতিক ও মানসিক শক্তি এবং পেশাগত জ্ঞান বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিয়েছি।”
আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দৃঢ় করার জন্য সেনাবাহিনীর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের অংশ হিসাবে নতুন পদাতিক ডিভিশন ও বেশ কিছু ব্রিগেড প্রতিষ্ঠার কথা প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তার সরকারের চলতি মেয়াদে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ, অস্ত্র, সরঞ্জামাদি ও জনবলের ক্ষেত্রে ‘অভূতপূর্ব’ উন্নতি হয়েছে। ফোর্সেস গোলের আওতায় ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া কোরে অত্যাধুনিক ট্যাংক, গোলন্দাজ বাহিনীর কামান, আকাশ প্রতিরক্ষার অংশ হিসাবে মিসাইল সিস্টেম, পদাতিক বাহিনীর ট্যাংক বিধ্বংসী মিসাইল এবং আর্মি এভিয়েশনে যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার সংযোজনের কথা প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতায় বলেন।
এর আগে বুধবার সকালে ১১ পদাতিক ব্রিগেডের সদরদপ্তরে পৌঁছালে সেনাপ্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক এবং ১৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও সিলেট এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল আনোয়ারুল মোমেন প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
বুধবার সকালে সিলেট বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে হযরত শাহজালাল র. এর মাজার জিয়ারত শেষে জালালাবাদ সেনানিবাসে পৌঁছান তিনি।