অনলাইন ডেস্কঃ
চোখের মারাত্মক অসুখ গ্লুকোমায় আক্রান্ত যৌবন কবি হেলাল হাফিজের চিকিৎসার
দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব
ইহসানুল করিম রোববার এ কথা জানান। খবর সূত্র বাসস। তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যায়
গণভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে কবি হেলাল হাফিজ সাক্ষাৎ করেন। এ সময়
প্রধানমন্ত্রী কবির শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন।’
বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. নুজহাত চৌধুরী ও
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি মাহবুবুল হক শাকিল এসময় উপস্থিত ছিলেন।
হেলাল
হাফিজ সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রীকে নিজের কবিতা আবৃত্তি করে শোনান এবং তার
দুটি কাব্যগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ এবং ‘কবিতা ৭১’ উপহার দেন।
কবির
চিকিৎসকরা জানান, গ্লুকোমায় আক্রান্ত হয়ে ৬৮ বছর বয়সী হেলাল হাফিজের একটি
চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। অন্য চোখটির অবস্থাও ভাল নয়।
গ্লুকোমা
একটি ‘অ-নিবারণযোগ্য’ রোগ, এতে চোখের উপর চাপ বেড়ে গিয়ে চোখের পিছনের
স্নায়ু অকার্যকর হয়ে পড়ে এবং ধীরে ধীরে চোখের দৃষ্টিক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়।
কবি
হেলাল হাফিজের চোখের চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
উদ্দেশে একটি লেখা লিখেন তরুণ কবি আলীম হায়দার। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যম সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কবির চিকিৎসার দায়িত্ব রাষ্ট্রের নেওয়া উচিত
বলে দাবি করেন অনেকেই।
"মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী, কবি হেলাল হাফিজের এক চোখে আলো দিন" শিরোনামের লেখায় আলীম
লিখেন, "কথা হলো, সাহায্য চেয়ে, করুণা ভিক্ষা চেয়ে দরখাস্ত লিখতে হবে কেন?
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার দাপট কী শুধু করুণাই দিতে চায়, ভালোবাসা নয়? অথবা
দায়িত্ব বলে কী কিছুই নেই, সব কী রাষ্ট্রের ঝুলি থেকে ফুরিয়ে গেছে? কী
স্পর্ধারে বাবা! কিন্তু এই অহংকার তো সাময়িক মাত্র, ক্ষমতার উত্তাপে হয়তো
রাজনীতিবিদদের মানবিক সত্ত্বাও হারিয়ে যায়।
তবু
আশা নিয়ে বসে আছি, সরকারপ্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধান নিশ্চয়ই শুধু করুণাই দিতে
চাইবেন না, তারা নিশ্চয়ই শুধু দাপট দেখাতে চান না, তাদের ভিতর নাগরিকদের
জন্য শুধু ভোটের তাড়না নয় বরং কিছু ভালোবাসাও আছে- সেটা আজও বিশ্বাস করি
বলেই সুনাগরিক হতে চাই।"
যৌবনে
‘যে জলে আগুন জ্বলে’ কাব্যগ্রন্থ দিয়ে জনপ্রিয়তার বদৌলতে কবিতা পাঠের আসর
ছাপিয়ে মিছিলে-স্লোগানে উচ্চারিত হতে থাকে তার কবিতা। সামরিক শাসনবিরোধী
আন্দোলনের সময়ে দেয়ালে দেয়ালেও উৎকীর্ণ হতে থাকে তার কবিতা- ‘এখন যৌবন যার
মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’।
৮০-এর
দশকে প্রকাশিত ওই কাব্যগ্রন্থের পর নিজেকে অনেকটা আড়ালে সরিয়ে নেন হেলাল
হাফিজ। তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা ৭১’ বের হয় তার ২৬ বছর পর ২০১২
সালে। ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার পান হেলাল হাফিজ।