বিশেষ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের জুড়ীতে একই মালিকানাধীন ধামাই, সোনারূপা ও আতিয়াবাগ চা বাগানে পুনরায় শ্রমিক অসন্তোষ শুরু হয়েছে। এতে রাতে সোনারূপা চা বাগানের প্রায় ১৫ লাখ টাকার ১৪০ বস্তা তৈরী চা পাতাবাহী একটি ট্রাক ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
তাদের দাবী, শ্রমিকদের বেতন ভাতা বকেয়া রেখে ম্যানেজার ওয়ার হাউজে না পাঠিয়ে চা পাতা পাচার করছিল। ৫ সেপ্টেম্বর সোমবার শ্রমিকরা ম্যানেজারকে আটক রেখে দুইমাসের বকেয়া বেতন আদায় করেছে।
জুড়ী থানা ও শ্রমিকদের সূত্রে জানা গেছে, বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধসহ বিভিন্ন দাবিতে চা শ্রমিকরা ১৮ জুলাই বাগানে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে চাক্ষকুরিচ্যুত ম্যানেজার গোপাল শিকদারের বাংলোয় তালা ঝুলিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। একই দাবিতে পরদিন শ্রমিকরা ধর্মঘট পালন করে। পরে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কিশোর রায় চৌধুরী মনির মধ্যস্থতায় পাওনা পরিশোধের আশ্বাসে শ্রমিকরা অবরুদ্ধ ম্যানেজারকে মুক্ত ও নতুন ম্যানেজার মালেক নেওয়াজকে বরণ করে নেয়।
কিন্তু প্রতিশ্র“তি অনুযায়ী ধামাই চা বাগানের শ্রমিকরা বকেয়া বেতন ভাতা না পাওয়ায় রোববার চা কারখানা ও অফিস প্রাঙ্গণে পুনরায় সমাবেশ করে। সন্ধ্যার সময় একই মালিকানাধীন সোনারূপা চা বাগানের চা পাতাবাহী একটি ট্রাকের চালান যাওয়ার পথে শ্রমিকরা আটক করে। তাদের অভিযোগ, ম্যানেজার চা পাতাগুলো পাচার করছিল। এসময় জুড়ী পুলিশ চালানের বৈধ কাগজ পত্র না থানায় ট্রাকটি থানায় আটক করেন।
শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের বেতন ভাতা না দেয়ায় তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। অন্যদিকে ভুয়া কাগজপত্রে বাগানের লাখ লাখ টাকার পাতা পাচার হচ্ছে। ধামাই চা বাগান শ্রমিক পঞ্চায়েতের সভাপতি যাদব রুদ্রপাল জানান, সোমবার ম্যানেজারকে আটক করায় তিনি দুই মাসের বকেয়া পরিশোধ করেছেন। এ টাকায় তারা ধারদেনা পরিশোধ করেছেন।
ধামাই চা বাগানের ব্যবস্থাপক মালেক নেওয়াজ ওয়াইজ জানান, মালিক পক্ষ টাকা না দেয়ায় শ্রমিকের বকেয়া পরিশোধ করতে না পারায় রোববার তারা অফিস প্রাঙ্গণে সমাবেশ করেছে। সোমবার ব্যাংক থেকে ঋণ তোলে দুই মাসের বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে।
সোনারূপা চা বাগানের ব্যবস্থাপক হুমায়ুন কবির চা পাচারের অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, বৈধ পন্থায় তিনি এক ট্রাক চা পাতা চট্টগ্রাম পাঠাচ্ছিলেন। ট্রাকের সাথে কাগজ না থাকায় পুলিশ তা আটক করেছে। জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জালাল উদ্দিন জানান, থানার নিচে শ্রমিকরা চা পাতাবাহী একটি ট্রাক আটক করলে উত্তেজনা দেখা দেয়। এসময় পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে চালানের বৈধ কাগজপত্র না পাওয়ায় চা পাতাবাহী ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। ধামাই চা বাগানের ম্যানেজার হুমায়ুন কবির চা পাতা চালানের বৈধ কাগজপত্র থাকার দাবী করলেও এখনও তা দেখাতে পারেননি।