নিউজ ডেস্কঃ ভারি বর্ষণ আর সীমান্তের ওপার থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ২০টি স্পট মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। শিগগির মেরামত না করা হলে দেখা দিতে পারে বড় ধরনের ভাঙ্গন। এতে তলিয়ে যেতে পারে প্রতিরক্ষাবাঁধ তীরবর্তী এলাকার শতাধিক গ্রামের হাজারো পরিবার। ওইসব এলাকার মানুষ ভাঙন আতংকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, আকস্মিকভাবে মনু নদীর পানি বেড়েছে। ইতোমধ্যেই প্রতিরক্ষাবাঁধের কমপক্ষে ২০ পয়েন্ট সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্পটে স্থানীয় লোকজন বালুভর্তি বস্তা দিয়ে ভাঙন ঠেকাতে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ঝুকিপূর্ণ স্পটগুলোর মধ্যে কুলাউড়ার উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের বেলেরতল, কলিরকোনা, টিলাগাঁও ইউনিয়নের আশ্রয়গ্রাম, চকসালন, তাজপুর, খন্দকার গ্রাম, মিয়ারপাড়া, সন্দ্রাবাজ, শরীফপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে যেকোন সময় এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। এছাড়া হাজিপুর ইউনিয়নের রনচাপ, সুলতানপুর, গাজীপুর, মন্দিরা, কাউকাপন এবং রাজনগর উপজেলার মালিকোনা, দনি আশ্রাকাপন, কোনাগাঁও, বাঘারহাট, উত্তর চাটি কাকিরচক, উজিরপুর, প্রেমনগর, মৌলভীবাজার সদরের নৈয়ারহাই, চাঁনপুর, বড়হাট এলাকার বিভিন্ন স্পট আশংকাজনক অবস্থায় রয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ স্পট ঘুরে দেখা যায়, যেকোন সময় প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙনের আশংকায় আতংকে রয়েছে নদী তীরবর্তী হাজার হাজার পরিবার। অনেক জায়গায় স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগে বাঁধ রক্ষায় প্রাথমিক ব্যবস্থা নেয়া হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কেউ বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও লোকজনের সাথে আলাপকালে তারা অনেকটা ক্ষোভের স্বরেই জনান, বর্ষা মৌসুমের আগেই এসকল ঝুঁকিপূর্ণ স্পটগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ড মেরামত করলে এখন এই অবস্থা হত না। মনু তীরবর্তী এলাকার অধিকাংশ মানুষ কৃষি নির্ভর। প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে কৃষক পরিবারগুলোকে।
স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন, অনেক স্পটই পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কর্মকর্তা পরিদর্শন করেননি। ভাঙনরোধে কোন রকম ব্যবস্থাও নেননি বলে জানান। হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চু জানান, ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কয়েক দফা আলোচনা করা হয়েছে। তবে এখনও কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহসিনা বেগম জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সরেজমিন পরিদর্শন করে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো মেরামতের ব্যবস্থা করার জন্য বলা হয়েছে।
এ ব্যপাারে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফয়জুর রব জানান আমাদের কর্মকর্তারা বিভিন্ন স্পট পরিদর্শন করেছেন। অতি ঝুকিপূর্ন স্থানে মাটিভর্তি বস্তা বা সাময়িক ব্যবস্থা নিয়ে বড় ধরনের ক্ষতি এড়ানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।