ডাকসুর ১ টাকার চা, ৩ টাকার সিঙ্গারা-সমুচা !

ডাকসুর ১ টাকার চা, ৩ টাকার সিঙ্গারা-সমুচা !
অনলাইন ডেস্কঃ ক্লাসের ফাঁকে তারেক, তামান্না, নিশা, শাহীনদের আড্ডার জায়গা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ক্যাফেটেরিয়ায়। সামান্য নাস্তার আর একে অন্যের সঙ্গে খুনসুটি, হৈ-হুল্লোড়ে সমৃদ্ধ তাদের প্রতিদিনকার আড্ডা। বিভাগে নিজেদের জানান দিতে পড়ালেখার প্রস্তুতিও চলে এখানে। আবার তারেকদের মতো দল বেধে চাকরি বাজারের পড়াশোনাও করে অনেকে। পড়ালেখা ও আড্ডা ভিন্ন হলেও নাস্তার ম্যানু কিন্তু সবার একই। ১ টাকার চা’য়ের সঙ্গে ৩ টাকা দামের সিঙ্গার-চমুছা।

ডাকসুর ক্যাফেটেরিয়ায় এভাবেই ৫-৭ জনের দলে দলে হাজির হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী। সামান্য নাস্তাতে জমে এখানকার আড্ডা। কথায় আছে চা’ নাকি ক্লান্তি দূর করতে অন্যতম সহায়ক। তবে এখানকার চা শুধু ক্লান্তি দূর করে না, প্রশান্তিও দিয়ে থাকে। কারণ মাত্র ১টাকা দামের এ চা বাজারের অন্য যেকোন চায়ের সঙ্গে অতুলনীয়। আবার সিঙ্গারা চমুচারও একই অবস্থা। ৭ টাকা খরচ করলে সমৃদ্ধ নাস্তা হয়ে যায় এখানকার শিক্ষার্থীদের। ১ টাকার চায়ের সঙ্গে ৩ টাকা দামের দুটি সিঙ্গারা চমুচা।

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ায় এতো স্বল্প দামেই বিক্রি করা হয় শিক্ষার্থীদের জন্য সকালের নাস্তা। স্বল্প দামের এ খাবারে যেন সবার আনন্দের মাত্রা বাড়াতেই বেশি কার্যকর। এ খাবার সংগ্রহ করতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতেও যেন কোন কষ্ট নেই শিক্ষার্থীদের। দামে কী আসে যায়, গুণে-মানে অটুট থাকলেই তো মিটে যায় ষোল আনা। ডাকসুর ‘চা’, ‘সমুচা’, ‘সিঙ্গারা’ তেমনই।

ডাকসুর এ চা’ য়ের লিকারে থাকে এলাচি, দারুচিনি, তেজপাতা, চিনি। এরপর এক টুকরো লেবু। এতেই রুচি সম্মত চা তৈরি হয়ে যায়। এ চায়ের তুলনা নাকি বাজারের অন্য সব চায়ের থেকে আলাদা। এখানকার মতো মুখরোচক চা আর কোথায়ও তৈরি হয় না বলে দাবি শিক্ষার্থীদের। তেমন একজন হলেন ইব্রাহীম খলিল। তিনি বলেন, একখানকার চা’য়ের কোন তুলনা হয় না। আবর সিঙ্গারা সমুচাতো বাজারের অন্য যেকোন সিঙ্গারার চেয়ে বেশি মজাদার। সল্প দামে ভালো মানের নাস্তা। সত্যিই অসাধারণ। শুধু বর্তমান শিক্ষার্থীরা নয় এখানে চা খেতে আসেন সাবেক অনেক ছাত্র-ছাত্রীও। কারণ এ চায়ের সঙ্গে মিশে আছে তাদের হাজারও স্মৃতি।

ক্যাফেটেরিয়ার এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৮০ সালে ‘চা’ এর দাম ছিল চার আনা, নব্বইয়ের দশকে তা বেড়ে হয় আট আনা। শতাব্দীর শুরুতে এসে বাড়ে আরো খানিকটা। আর যখন দেশের উন্নতির রেখাকে স্পষ্ট করে বিদায় নেয় সিঁকি-আধুলি, তারপর থেকেই এর দাম ১ টাকা। তাও প্রায় এক দশক হয়ে গেছে। সম্ভবত এসব কারণেই ‘চা’ বানানোর কারিগর ও কর্মচারী মো. জয়নাল প্রায়ই হাস্যরস ‘লাভের চা না, ছাত্র বাঁচাইন্যা চা’ বলে।

প্রশাসনিক কর্মকর্তা আফজাল হোসেন বলেন, শুধু চা নয়, এখানকার সব খাবারই কম মূল্যে পরিবেশ করা হয়। শিক্ষার্থীদেরও আগ্রহের কমতি নেই।

Post a Comment

Previous Post Next Post