একজন বঙ্গবন্ধুঃ একজন খাঁটি বাঙ্গালি

একজন বঙ্গবন্ধুঃ একজন খাঁটি বাঙ্গালি
সাঈদ খান শাওন
একজন মানুষ যিনি এসেছিলেন এদেশের মুক্তিকামী জনতার প্রতিনিধি হয়ে, যিনি প্রথমে শিখেছেন কিভাবে দেশকে ভালোবাসতে হয়? তারপর শিখেছেন কিভাবে মানুষকে ভালোবাসতে হয়? এই দেশকে ভালোবাসার নামান্তরই হলো মানুষকে ভালোবাসা। ১৯৭৩ সালের ২৬ ফ্রেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জের এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, " বক্তৃতা দিয়ে ভালবাসা পাওয়া যায় না। মানুষের দূর্দিনে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয়। তাহলেই মানুষ মানুষকে ভালবাসে।" আমরা হলাম বিশ্বাসঘাতক জাতি। বিশ্বাসঘাতকতা আমাদের রক্তে মিশে আছে। যে মানুষ ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ২৪ বছরের মধ্য ১২ বছর জেলে বন্দী ছিলেন, যে মানুষটি তার চিন্তা চেতনায় বাংলার মানুষের কষ্ট অনুভব করতেন, তাদের মুক্তির জন্য সারা বাংলায় খেয়ে না খেয়ে চষে বেরিয়েছেন,যিনি বলতেন, একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি, একজন বাঙ্গালি হিসেবে যা কিছু বাঙ্গালির সাথে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। যিনি গর্ব করে বলতেন আমি বাঙ্গালি, আমি মুসলমান, আমি মানুষ। যিনি ছিলেন শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের সর্বত্র শোষিত, নিপীড়িত, বঞ্চিত মানুষের কন্ঠস্বর, তাইতো আমরা উনার কন্ঠে শুনতে পাই, আমি শাসিতদের পক্ষে নই, আমি সমগ্র বিশ্বের শোষিত মানুষের পক্ষে। যার জন্মই হয়েছিল এদেশের মানুষের জন্য সৃষ্টিকর্তার আর্শীবাদ রূপে কিন্তু আমরা বেঈমান, বিশ্বাসঘাতক জাতি তাঁর মূল্য দিতে পারি নাই। কিছু উশৃঙ্খল সেনাবাহিনীর অফিসাররা তাঁকে হত্যা করে যা ইতিহাস বলে এটি কোনে সেনা বিদ্রোহ ছিল না। আমরা যদি তাঁকে মূল্যায়ন না করি, আমরা যদি তাঁর রেখে যাওয়া কাজ সমাপ্ত না করি, আমরা যদি মাথা উচুঁ করে বলতে না পারি যে, আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার সন্তান তাহলে ইতিহাস নয়, সবার উপরে সর্বজ্ঞানী মহান আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করবেন না। হ্যাঁ আমরা বুক ফুলিয়ে মঞ্চে বক্তৃতা করি, ত্যাগের কথা বলি কিন্তু এদেশে বঙ্গবন্ধুর চাইতে ত্যাগী কেউ কি দেখাতে পারবেন? আমরা বাংলাদেশের ইতিহাস দেখলে দেখব, সবাই মন্ত্রিত্বের জন্য দল ত্যাগ করে, কিন্তু বঙ্গবন্ধু দলের জন্য মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিলেন, ছেড়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নিলেন। এরকম হাজার হাজার ত্যাগ আমরা উনার জীবনী ঘাটলে দেখতে পাই। তিনি বলতেন, মানুষকে ভালোবাসলে ত্যাগ তো করতে হবে, সে ত্যাগ চরম ত্যাগও হতে পারে। মানুষের বিভিন্ন জিনিসের প্রতি মোহ থাকে, নেশা থাকে, আগ্রহ থাকে। মানুষ তার কাঙ্খিত জিনিসটি পেতে মরিয়া হয়ে যায়। আমরা জাতির পিতার জীবনী পর্যালোচনা করে দেখি উনার একটাই নেশা মানবপ্রেম, দেশপ্রেম, বাঙ্গালিপ্রেম। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ১৫ আগস্ট যারা শাহাদাতবরণ করেছেন, তাদের আত্নার মাগফেরাত কামনা করছি এবং তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, আসুন আমরা এই শোককে শক্তিতে পরিণত করে দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতকে সুসংহত করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করি।
লিখেছেন - সাঈদ খান শাওন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। 

Post a Comment

Previous Post Next Post