স্টাফ রিপোর্টারঃ কুলাউড়ায় কাঠ পাচারকারী সিন্ডিকেট চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এই চক্রটি নাম্বার প্লেটবিহীন গাড়ি ব্যবহার করে স্থানীয় রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে মূল্যবান গাছ পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে। ২৮ জুলাই বৃহস্পতিবার ভোরে ভাটেরা রিজার্ভ ফরেস্টের সৃজনশীল বাগান থেকে নাম্বার প্লেটবিহীন ট্রাক দিয়ে গাছ পাচার করে নিয়ে যাওয়ার সময় উপজেলার ভাটেরা বাজার সংলগ্ন এলাকা থেকে ৮০ ঘনফুট চোরাই গাছসহ গাড়ি আটক করে পুলিশ । তবে এ সময় পাচারের সাথে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দির্ঘদিন ধরে স্থানীয় একটি চক্র ভাটেরা ও বরমচাল রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে অবাধে গাছ চুরির সাথে জড়িত। উপজেলার ভাটেরা রিজার্ভ ফরেস্টের সৃজিত বাগান থেকে বৃহস্পতিবার ভোরে সংঘবদ্ধ কাঠ পাচারকারী চক্র ট্রাকে করে আকাশমনি গাছ পাচার করে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় বাজার এলাকায় টহলরত কুলাউড়া থানার এ এস আই রুকনুজ্জামানসহ পুলিশ তাদেরকে ধাওয়া করলে চালকসহ পাচারকারীরা ২৪টি গাছ ভর্তি ট্রাকটি রেখে পালিয়ে যায়। পরে গাছ বোঝাই ট্রাকটি থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। উদ্ধারকৃত কাঠের মূল্য প্রায় ১ লক্ষ টাকা। সূত্র আরও জানায়, আটক ট্রাকটি ব্রাহ্মণবাজারের মৌলভীগাঁও গ্রামের লাল মিয়ার পুত্র ও ইউপি তালামীযের সভাপতি আবুল হোসেনের। উপজেলা তালামীযের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ভাটেরা ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা বদরুল আমীনের সহযোগীতায় আবুল হোসেন গাছগুলো পাচার করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। স্থানীয়রা জানান বদরুল আমীন ও আবুল হোসেনের যোগসাজোশে সংঘবদ্ধ চক্র রিজার্ভ ফরস্টের বন থেকে অবাধে গাছ ও কাঠ পাচারে লিপ্ত রয়েছে এবং চোরাই কাঠ পাচারের জন্য এরকম নাম্বার প্লেট বিহীন গাড়ি ব্যবহার করেন।
এদিকে গত শুক্রবারেও ভাটেরা ইউনিয়নের কলিমাবাদ গ্রামের আলকুছ মিয়ার পুকুর থেকেও ১৪ টি গাছ উদ্ধার করেন স্থানীয় বিট কর্মকর্তারা। এগুলোও পাচারের সাথে বদরুল আমিন জড়িত ছিলেন বলে স্থানীয়রা দাবি করেন। ভাটেরা রেঞ্জের বন বিট কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন কলিমাবাদ গ্রামের আলকুছ মিয়ার পুকুর থেকে গাছ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অফিসিয়াল কাজের জন্য ভাটেরার বাহিরে থাকায় বৃহস্পতিবার চোরাই গাছসহ গাড়ি আটকের বিষয়টি জানিনা। এলাকায় গিয়ে খবর নিবো।
এ ব্যাপারে আবুল হোসেন মোবাইলে বলেন, গাড়িটি দিয়ে শুধু গাছগুলো উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে। গাড়ির নাম্বার প্লেট নেই কেন জিজ্ঞেস করা হলে তিনি কোন সুদুত্তর না দিয়ে বলেন এটা আমার ভাইয়ের গাড়ি।
বদরুল আমীন নিজে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। স্থানীয় একটি প্রতিপক্ষ আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য গুজব ছড়াচ্ছে। তিনি আরও বলেন গত শুক্রবার যে গাছগুলো উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলো আলকুছ মিয়া অন্য আরেকজনের কাছ থেকে কিনে এনেছিলেন।
কুলাউড়া বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কাশেম ভূঁইয়া জানান, তিনি অফিসের কাজে জেলা সদরে ছিলেন তাই এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কিছু বলতে পারছেন না। তিনি ভাটেরা বিট কর্মকর্তার কাছ থেকে এ বিষয়ে জেনে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাড়িসহ চোরাই গাছ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।