কুলাউড়ায় ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক হতে দেড় ডজন প্রার্থী মরিয়া!

ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক হতে দেড় ডজন প্রার্থী মরিয়া!
নাজমুল ইসলাম: বিলুপ্ত থাকা মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিঠি শীঘ্রই আসছে জেলা ছাত্রলীগের এমন ঘোষনার পর থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার কৃতি সন্তান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন ও জেলা সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের মন জয় করতে গোপনে মরিয়া হয়ে উঠেছেন সম্ভাব্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে দেড় ডজন পদ প্রত্যাশীরা।

সুত্রে জানা যায়, সভাপতি পদ পেতে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত আহব্বায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহব্বায়ক হাবিবুর রহমান জনি,উপজেলা শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের সহ সভাপতি জহিরুল ইসলাম, কুলাউড়া ডিগ্রী কলেজের সাবেক সভাপতি ইকবাল আহমদ, সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আয়ব্বায়ক মোহাম্মদ আলী চৌধুরী তরিক, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মোশাহিদ চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক শাওন আহমদ, বরমচাল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি পারভেজ আহমদ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য সিপন আহমদ, পৃথিমপাশা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মইনুল ইসলাম পংকি।

এদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে দৌড়ঝাঁপে রয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তায়েফ মোহাম্মদ নিয়াজুল ইসলাম, সাবেক সহ সম্পাদক মোহাম্মদ সামছুল ইসলাম,জয়চন্ডি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তায়েফুর রহমান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু জাহিদ, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আয়ব্বায়ক জসিম উদ্দিন, পৌর ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সেবুল আহমদ, ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগ নেতা আবু সায়হাম রুমেল, মিজানুর রহমান, রাউৎগাঁও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আয়ব্বায়ক মোদাব্বির হোসেন জুমন।

মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের নির্দেশনার পর থেকেই পদ প্রত্যাশীরা জীবন বৃত্তান্ত জমা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সম্পাদকের মন জয় করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতাদের ছবি প্রকাশ করছেন আর ভালো ভালো স্ট্যাটার্স দিচ্ছেন। তবে এই স্ট্যাটার্স গুলো কি স্থায়ী থাকবে না কমিঠি ঘোষণার পর স্থবির হয়ে যাবে এ প্রশ্ন থেকেই যায়! এদিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক বর্তমান জুড়ী উপজেলা তৎকালীন কুলাউড়া উপজেলার কৃতি সন্তান হওয়ায় সভাপতি সম্পাদক পদ প্রত্যাশীরা আত্বীয় খোঁজে বের করে পদ পেতে লবিংয়ে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। সম্প্রতি এস এম জাকির হোসেনের নাম ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কিছু ব্যক্তি তাদের স্বার্থ হাসিল করে নিচ্ছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।

কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী হাবিবুর রহমান জনি বলেন, গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের লক্ষে ছাত্রলীগের সকল আন্দোলন সংগ্রামে বিগত দিনগুলোতে সক্রিয় ছিলাম আগামীতেও সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহন করে কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগকে আরও সুসংগঠিত করতেই এবার সভাপতি প্রার্থী হয়েছি। ছাত্রলীগের নের্তৃবৃন্দ তাকেই মূল্যায়ন করবেন বলে শতভাগ আশাবাদি।

অপর সভাপতি পদ প্রত্যাশী মোহাম্মদ আলী চৌধুরী তরিক জানান, এবারের কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে তাকেই মূল্যায়ন করবে মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগ। তিনি আরও বলেন ছাত্রলীগের উপজেলা সভাপতি পদ পেতে একটি কলেজের প্রভাষক পদ থেকে অব্যাহতি নিচ্ছেন।

সাধারন সম্পাদক প্রার্থী তায়েফ মোহাম্মদ নিয়াজুল ইসলাম, ৮ বছর ধরে কুলাউড়ায় ছাত্রলীগের বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয় ভাবে অংশ নিয়ে অন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। তার জীবন বৃত্তান্ত বিভেচনা করে ছাত্রলীগের জেলার নের্তৃবৃন্দ তাকেই সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করবেন বলে আশাবাদি। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ না পেলেও ছাত্রলীগ করে যাবেন এ তরুণ ছাত্রলীগ নেতা। অধ্যয়নরত ছাত্র ও যোগ্য মেধাবী ছাত্রলীগ কর্মীদের মূল্যায়ন করার জন্য কেন্দ্রীয় ও জেলা ছাত্রলীগ নের্তৃবৃন্দের কাছে জোর দাবি জানান। এ ছাত্রলীগ নেতা অভিযোগ করেন একজন প্রভাষক হয়েও সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন তিনি কলেজে শিক্ষকতা করবেন না উপজেলা ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালন করবেন সে বিষয়টি তদন্ত করার দাবি জানান।

অপর সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামছুল ইসলাম জানান,সদ্য বিলুপ্ত কমিঠিতে তিনি সহ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। ছাত্রলীগের নির্দেশনা অনুয়ায়ী জীবন বৃত্তান্ত জেলা ছাত্রলীগের কাছে জমা দিবেন। অছাত্র কাউকে ছাত্রলীগের কোন পদে পদ না দেয়ার দাবি জানান। মেধাবী এ ছাত্র নেতা শতভাগ আশাবাদি তাকেই ছাত্রলীগ উপজেলা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করবে জেলা ছাত্রলীগের নের্তৃবৃন্দ।

আরেক সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আবু জাহিদ বলেন তিনি দীর্ঘ দিন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতি করে যাচ্ছেন। ছাত্রলীগের নের্তৃবৃন্দ তাকেই সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করবেন বলে আশাবাদি। জাহিদ ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযোগ করেন কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে তরিকুল ইসলাম নামে একজন তার শিক্ষা জীবন শেষ করে একটি কলেজের প্রভাষক থাকা সত্বেও কিভাবে সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়া কতটুকু যৌক্তিক এ প্রশ্ন থেকেই যায়! প্রভাষককে পদ দিয়ে ছাত্রলীগকে বিতর্কিত না করতে কেন্দ্রীয় ও জেলার নের্তৃবৃন্দকে অবগত করেছেন।

কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আয়ব্বায়ক সিপার উদ্দিন আহমদ বলেন,গঠনতান্ত্রিক ভাবে উপজেলা কমিঠি জেলা ছাত্রলীগের নের্তৃবৃন্দরা নির্বাচিত করে থাকেন। সাবেক সভাপতির পরামর্শ চাওয়া বাধ্যতামূলক নয় তবে জেলা নের্তৃবৃন্দরা চাইলে পরামর্শ নিতে পারে। ছাত্র ছাড়া ছাত্র রাজনীতি হয় না তাই ছাত্রত্বের মধ্যে যেন নের্তৃত্ব দেয়া হয় মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগ নের্তৃবৃন্দের কাছে এ দাবি জানান সাবেক কুলাউড়ার তুখোড় ছাত্র নেতা।

কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের আরেক সাবেক সভাপতি আব্দুল মতলিব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,উপজেলা ছাত্রলীগের কমিঠি হচ্ছে জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কোন আলোচনা ও মতামত ছাড়াই যদি নতুন কমিঠি ঘোষনা হয় সেটি ছাত্রলীগের জন্য দুঃখ জনক বলে মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন নতুন কমিঠিতে যারা প্রার্থী তাদের সঠিক পরিচয় জানেন না।

দৌড়ঝাঁপে থাকা অন্যান্য সভাপতি সম্পাদকরা সবাই শতভাগ আশাবাদি আসছে কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিঠিতে তারাই স্থান পাবেন।

মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান রনি মোবাইল ফোনে জানান,পদ প্রত্যাশীদের জীবন বৃত্তান্ত জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরও জানান ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অধ্যয়নরত ছাত্র ছাড়া কাউকে মুখ দেখিয়ে ছাত্রলীগের কোন পদ দেয়া হবে না। এবারের কমিটিতে জীবন বৃত্তান্ত ও ছাত্রলীগের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা পর্যালোচনা করে ছাত্রলীগের দায়িত্ব দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ২১ জুন মঙ্গলবার মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা শাখার কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমের গতিশীলতা আনয়ন এবং নতুন নের্তৃত্ব সৃষ্টির লক্ষে বিলুপ্ত ঘোষিত কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠন করা হবে এতে আঘ্রহী পদ প্রত্যাশিদের পূর্ণাঙ্গ জীবন বৃত্তান্ত আগামী ২৭ জুনের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সম্পাদক বরাবরে প্রেরনের নির্দেশ দেয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post