সেলফি কেড়ে নিলো ৭ প্রাণ

সেলফি কেড়ে নিলো ৭ প্রাণ
অনলাইন ডেস্কঃ গঙ্গায় সাঁতার কাটতে নামার আগে ‘সেলফি’ তুলছিলেন ১৯ বছরের যুবক শিবম। উত্তরপ্রদেশের কানপুর শহরে ওই সময় মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। পা পিছলে গঙ্গায় পড়ে যান শিবম। তাকে উদ্ধার করতে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন একই সঙ্গে গঙ্গায় সাঁতার কাটতে আসা মাকসুদ। কানপুরের সিনিয়র পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট শলভ মাথুর বলেন, একে তো বৃষ্টি, তার ওপরে গঙ্গায় তখন ভীষণ স্রোত ছিল সেই সময়। শিবম আর মাকসুদ তলিয়ে যেতে থাকেন। বন্ধুদের বাঁচাতে একে একে পানিতে ঝাঁপ দেন আরও পাঁচ বন্ধু। বুধবার সন্ধ্যায় উত্তরপ্রদেশের কানপুরে এ ঘটনা ঘটে।
কিন্তু স্রোতের সঙ্গে লড়াই খুব বেশিক্ষণ চালাতে পারেননি কেউই। ডুবুরি নামানো হয় কিছুক্ষণের মধ্যেই। প্রায় দু’ঘণ্টা পরে সাতজনেরই দেহ উদ্ধার করেন ডুবুরিরা। হাসপাতালে নিয়ে গেলে সবাইকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
এদের মধ্যে মাকসুদের বয়স ৩০ এর ওপরে কিন্তু বাকিরা সকলেই ১৯ থেকে ২১ বছর বয়সের। শলভ মাথুরের মন্তব্য, সেলফি তুলতে গিয়ে বৃষ্টির মধ্যে পা পিছলে পড়ে গিয়েই দুর্ঘটনা ঘটল।
এক পরিসংখ্যান বলছে, গত দুই বছরে পঞ্চাশটিরও বেশি মৃত্যুর কারণ সেলফি। মুম্বাইয়ে আরব সাগরের তীরে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে পা পিছলে জলে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল তিন যুবতীর। তাদের বাঁচাতে গিয়ে মারা যান অন্য এক যুবক। চলন্ত ট্রেনের কাছে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে জানুয়ারি মাসে উত্তরপ্রদেশেই মারা গিয়েছিলেন তিন কলেজ শিক্ষার্থী।
ওই দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া তাদের এক চতুর্থ সঙ্গী পুলিশকে জানিয়েছিলেন, চলন্ত ট্রেনটার খুব কাছে গিয়ে এক দুঃসাহসিক সেলফি তুলে সামাজিক সাইটে পোস্ট করার ইচ্ছে ছিল তাদের। মার্চ মাসে পাঞ্জাবের পাঠানকোটে ১৫ বছরের এক কিশোর তার বাবার গুলিভর্তি পিস্তল নিজের কপালে ঠেকিয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে মারা যায়। ভুলক্রমে পিস্তলের ট্রিগার টেনে দিয়েছিল সে।
সেলফি তুলতে গিয়ে পৃথিবীতে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে লেবাননে। এখন সেলফি তুলতে গিয়ে পৃথিবীতে যতজন মারা যান, তার প্রায় অর্ধেক ঘটনাই ভারতের। ‘সেলফি’ তোলার হিড়িক আটকাতে মুম্বাই পুলিশ শহরের ১৬টি জায়গাকে ‘নো সেলফি জোন’ বলে চিহ্নিত করেছে, যেখানে সেলফি তোলা নিষিদ্ধ।

Post a Comment

Previous Post Next Post