'৩০ লাখ নয়; মুক্তিযুদ্ধে তারও বেশি বাঙালীকে হত্যা করা হয়েছে'

'৩০ লাখ নয়; মুক্তিযুদ্ধে তারও বেশি বাঙালীকে হত্যা করা হয়েছে'
নিউজ ডেস্কঃ স্বাধীনতার চার দশক পরে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে কত লোক শহীদ হয়েছিলেন এই প্রশ্নটি নতুন করে ভাবাচ্ছে বাঙালীদের। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত ইঙ্গিত দিচ্ছে ৩০ লাখ নয় বরং তারও বেশি বাঙালীকে হত্যা করা হয়েছে সে সময়। মুক্তিযুদ্ধ গবেষকদেরও মত একই রকম। পাকিস্তানীরা যে অন্তত ৩০ লাখ বাঙালীকে হত্যা করতে চেয়েছিলও তার প্রমাণ মিলেছে সে সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনুসন্ধান শেষে মার্কিন সাংবাদিক ও গবেষক রবার্ট পেইনের লেখা "ম্যাসাকার" বইটিতে। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন " ত্রিশ লাখ বাঙালীকে হত্যা করো, তখন তারা আমাদের হাত চেটে খাবে"। সেনাবাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে এভাবেই গণহত্যার নির্দেশ দেন ইয়াহিয়া। যার নাম দেয়া হয় "অপারেশন সার্চলাইট"। এর প্রতিফলন দেখা যায় পাকিস্তানীদের নির্মম গণহত্যায়, পুরো দেশে ছড়িয়ে থাকা বদ্ধ ভূমিতে। যার ৯০ শতাংশই এখন নিশ্চিহ্ন। স্বাধীনতার চার দশক পর প্রশ্ন জেগেছে, এতদিন কেন ত্রিশ লাখ শহীদের কথা বলা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ গবেষক রা বলছেন, ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় গণহত্যা হয়েছে বাংলাদেশে। তাদের মতে, আর সবগুলো বধ্যভূমি খুঁজে বের করা গেলে ১৯৭১ সালের গণহত্যায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে ৩০ লাখ।

মুক্তিযোদ্ধা গবেষক শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘প্রায় সাড়ে ৩ হাজার বধ্যভূমি শনাক্ত করা হয়েছিল। সেখানে প্রায় ৫ থেকে ১০ হাজার মানুষ হত্যা করা হয়েছিলও। মতিউর রহমান নিজামীর এলাকায় একটি কুয়া ছিল সেখানে ৩শ' থেকে সাড়ে ৩শ' মানুষকে হত্যা করা হয়েছিলও। চুতনগর বধ্যভূমিতে কয়েক ঘণ্টা নোটিশে সেখানে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। মহেশখালীতে একটি মন্দিরে কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছিলও।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মনে হয় বিচার প্রক্রিয়া শেষ হলে জানা যাবে একাত্তরের নয় মাসে ৩০ লাখ বা এর বেশি মানুষ হত্যা করা হয়েছিল।’

এরই মধ্যে ৭১ এর মানবতা বিরোধীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের করা মামলা তদন্তে গণহত্যার বিষয়টিও উঠে আসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। আর প্রত্যেকটি তদন্তে গণহত্যার বিবরণ নতুন করে ভাবাচ্ছে- মুক্তিযুদ্ধে কত বাঙালীকে হত্যা করেছিলো পাকিস্তানী হানাদাররা। তারা বলছেন, এসব তদন্ত যেমন হতে হবে দ্রুত, তেমনি নির্ভুল। আর তাতে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানীদের নৃশংসতা আর গণহত্যা বিশ্বের কাছে তুলে ধরার ক্ষেত্রে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

Post a Comment

Previous Post Next Post