অনলাইন ডেস্কঃ ‘বাটাক্লঁ থিয়েটারে যেনো রক্তের নদী বইছে’- এভাবেই জঙ্গি হামলার পর পরিস্থিতির বর্ণনা দিলেন প্যারিসের এক সাংবাদিক। শুক্রবার রাতে আইএস জঙ্গিরা যখন বাটাক্লঁ কনসার্ট হলে তাণ্ডব চালাচ্ছিল, তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন রেডিও সাংবাদিক জুলিয়েন পিয়ার্স। শুক্রবার রাতে বাটাক্লঁ থিয়েটার ও কনসার্ট হলে মার্কিন রক ব্যান্ড 'ইগলস অব ডেথ মেটাল'-এর অনুষ্ঠান ছিল। এক ঘণ্টার অনুষ্ঠান প্রায় শেষের দিকে, ঠিক তখনই হলের পেছনের দিকের দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ে কালো পোশাক পড়া কয়েকজন। কোনও কিছু বুঝে উঠার আগেই ঝরে পড়ে কয়েকটি তাজা প্রাণ। জঙ্গিদের মুখ ঢাকা ছিল না বলে জানিয়েছেন জুলিয়েন পিয়ার্স। প্রত্যেকেরই বয়স ২৪-২৫ এর মধ্যে। শান্ত মুখে উত্তেজনার লেশমাত্র ছিল না। জঙ্গিরা 'আল্লাহু আকবর' বলে চিৎকার করছিল বলে জানিয়েছেন আরও এক প্রত্যক্ষদর্শী। দেড় হাজার জন একসঙ্গে বসে অনুষ্ঠান দেখতে পারে এই থিয়েটার হলে। বেশিরভাগ দর্শককেই জিম্মি করে জঙ্গিরা। ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, বাটাক্লঁ হলেই মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১১২ জনের। পুলিশ আসার পর বাইরে থেকে গুলি ও একের পর এক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে চার জঙ্গির। এর মধ্যে তিনজনের কোমরে ছিল বিস্ফোরক বেল্ট। অন্তত ১০০ জন জিম্মিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই গুরুতর। পিয়ার্স জানায়, বন্দুকধারীরা হলের পেছনে এক জায়গাতেই দাঁড়িয়ে ছিল। দর্শকরা অসহায়ের মতো চারদিকে ছুটোছুটি করছিলেন, গুলি থেকে বাঁচতে মাটিতে শুয়ে কোনওরকমে নিজেদের আড়াল করার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু বন্দুকধারীরা মোটেই নিজেদের জায়গা থেকে সরছিল না। পাখির মতো সবাইকে গুলি করছিল। ভয়াবহ সেই দৃশ্যকে নরকের সঙ্গে তুলনা করেছেন পিয়ার্স। বেশ কিছুক্ষণ গুলির পর রাইফেল রিলোড করার জন্য একটু থেমেছিল জঙ্গিরা। সেই সুযোগে আরও কয়েকজনের সঙ্গে রাস্তায় বেরিয়ে আসতে পারেন পিয়ার্স। রাস্তায় তখন চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে প্রায় ২০-২৫ জন। তার মধ্যে অনেকেই মৃত, কেউ কেউ গভীর ভাবে আহত। তখনও পর্যন্ত ঘটনাস্থলের আশেপাশে কোনও পুলিশ দেখতে পাননি বলে জানিয়েছেন পিয়ার্স।
