আফগানিস্তানের ইতিহাস গড়া জয়

আফগানিস্তানের ইতিহাস গড়া জয়
আমিন জাহানঃ খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। ক্রিকেটের সাথে আফগানদের কোনো পরিচয়ই ছিল না। তারপর ধীরে ধীরে দু-এক কদম সামনে আসা। ক্রিকেটকে বরণ করে নেয়া। একসময় ওয়ানডে স্টেটাসটাও পেয়ে গেলো তারা। কিন্তু মাঠের খেলায় খুব একটা সুবিধা করতে পারছিল না। কিন্তু এবার পারলো। বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে বীরদর্পে আফগানরা তা করে দেখালো। গড়লো অনন্য ইতিহাস। ম্যাচ বাঁচাতে প্রাণপণ লড়েছিলেন শন উইলিয়ামস। কিন্তু দলের হার এড়াতে পারেননি তিনি। পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইতিহাস গড়া জয় পেলো আফগানিস্তান। ৭৩ রানে জিতে ৫ ম্যাচের সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে ঘরে তুলেছে আফগানিস্তান। টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে এই প্রথম কোনো সহযোগী দেশ একাধিক ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জিতল। গত বছর জিম্বাবুয়ে সফরে ৪ ম্যাচের সিরিজ ২-২ ব্যবধানে ড্র করে আফগানিস্তান। সেবার শেষ দুই ম্যাচ জেতা দলটি এবার সিরিজই জিতে গেল। গতকাল শনিবার বুলাওয়ায়োর কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ২৪৫ রান করে আফগানিস্তান। মোহাম্মদ শাহজাদের (২৬) সঙ্গে ৩৫ রানের উদ্বোধনী জুটিতে দলকে ভালো শুরু এনে দেন নুর আলি জাদরান। দ্বিতীয় উইকেটে মোহাম্মদ নবির সঙ্গে ৯৭ রানের জুটিতে দলকে ভালো সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন তিনি। সর্বোচ্চ ৫৪ রান করা নুর আলির ৮৮ বলের ইনিংসটি গড়া ৫টি চারে। তার বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টেকেননি সাবেক অধিনায়ক নবি (৫৩)। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় আফগানিস্তান। কিন্তু অধিনায়ক আসগর স্তানিকজাইয়ের ধৈর্য্যশীল ৩৮ ও মিসওয়াইস আশরাফ (১৬ বলে ২১) ও দৌলত জাদরানের (৯ বলে অপরাজিত ১৩) দুটি আক্রমণাত্মক ইনিংসে লড়াইয়ের পুঁজি গড়ে অতিথিরা। জিম্বাবুয়ের ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ও সিকান্দার রাজা ৩টি করে উইকেট নেন। জবাবে ৪৪ ওভার ১ বলে ১৭২ রানে অলআউট হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৫ রানে টপ অর্ডারের ৩ ব্যাটসম্যানকে হারায় জিম্বাবুয়ে। দৌলত জাদরান ফিরিয়ে দেন দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান চামু চিবাবা ও রিচমন্ড মুতুমবামিকে। ৩ নম্বর ব্যাটসম্যান ক্রেইগ আরভিনকে বিদায় করেন মিরওয়াইস আশরাফ। তৃতীয় ওভারে ক্রিজে আসা উলিয়ামস এক প্রান্ত আগলে রাখলেও অন্য প্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। আমির হামজা নিজের তিন ওভারের মধ্যে টিনোটেন্ডা মুটুমবডজি ও রাজাকে ফিরিয়ে দিলে ১৫তম ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৫১। অধিনায়ক এল্টন চিগুম্বুরা (১৪) ও টেন্ডাই কিশোরো (১০) দুই অঙ্কে পৌঁছলেও উইলিয়ামসকে খুব একটা সঙ্গ দিতে পারেননি। তাই ক্যারিয়ারের প্রথম শতক করেও দলের হার এড়াতে পারেননি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান উইলিয়ামস। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ১০২ রান করেন তিনি। তার ১২৪ বলের ইনিংসটি ৩টি চার ও ৪টি ছক্কা সমৃদ্ধ। ২২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে আফগানিস্তানের সেরা বোলার দৌলত। হামজা ৩ উইকেট নেন ৪১ রানে। সহযোগী দেশগুলোর বিপক্ষে শেষ ৬ ম্যাচের ৪টিতে হারল জিম্বাবুয়ে।

Post a Comment

Previous Post Next Post