ফলোআপঃ চলন্ত বাসে কলেজছাত্রী নির্যাতন; ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন মা

চলন্ত বাসে কলেজছাত্রী নির্যাতন;
নিউজ ডেস্কঃ মৌলভীবাজার সরকারি মহিলা কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রীকে চলন্ত বাসে শারীরিক নির্যাতনকারী বখাটে পারভেজ এখন পুলিশ হেফাজতে। ঘটনার ৫ দিন পর রোববার দুপুর ১২ টার দিকে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অপরাধীর মা তাকে তুলে দিলেন পুলিশ সুপার মোঃ শাহ জালালের কাছে। সেখান থেকে পাভেজকে রাজনগর থানা হাজতে পাঠানো হয়। জানা যায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাজনগর উপজেলার জামুড়া গ্রামের মেয়ে মৌলভীবাজার সরকারী মহিলা কলেজে থেকে অনার্স ১ম বর্ষের ইন কোর্স পরীক্ষার শেষ দিনে বাস যোগে বাড়ি ফিরছিলেন। শহরের চাদঁনীঘাট বাস স্ট্যান্ডে এসে তিনি মৌলভীবাজার ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কে চলাচলকারী একটি বাসে চড়েন। বাস ছাড়ার আগ দিয়ে এক যুবক তার গা ঘেষে দাঁড়ালে তিনি তখন পাশে বসা যাত্রীদের কাছে নালিশ জানান। কিন্তু কেউ তাকে সহযোগিতা করেননি। তখন বখাটে যুবক প্রথমে তার পায়ে পা দিয়ে আঘাত করে। একপর্যায়ে তাকে লাথি মারে এবং তার মাথায় প্রচন্ড আঘাত করে। এতে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। একপর্যায়ে এলাকার ফারুক নামের এক যাত্রী তার পরিচয় পেয়ে পিছনের আসনে নিয়ে বিশ্রামে বসান। কোনমতে সে পাশের এক যাত্রীর মোবাইল ফোন নিয়ে তার চাচা লয়লুছকে তার উপর একজন যাত্রী হামলা করার কথা জানিয়েছিলেন। এর পর তার চাচা ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের মুন্সিবাজারে এসে বাস থেকে তাকে নামান। এ সময় বখাটে পারভেছকে যাত্রীরা ধরে ফেলে। তাকে মুন্সিবাজার আরিফ ব্যাটারী এন্ড সাউন্ড সিস্টেম নামের এক দোকানে দোকানির জিম্মায় রাখা হয়। বিষয়টি সাথে সাথে মুন্সিবাজার ইউপি চেয়ারম্যানকে জানানো হয়। তিনি ছাত্রীকে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার তাগিদ দেন। সুযোগ বুঝে বখাটে পারভেছ ওই দোকান থেকে সটকে পড়ে। এ দিকে রোববার থানা হাজতে পাভেজের সাথে কথা বললে সে দাবি করে জানান, মেয়েটির সাথে তার ভাববিনিময়ের ঘটনা রয়েছে। তিনি মেয়েটিকে নেকাব পরা অবস্থায় বাস গাড়িতে না দেখে আবেগে মারধোর করেছেন। কলেজছাত্রীটি ওই দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিযোগটি রাজনগর থানায় হস্তান্তর করেন। রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আইনুর আক্তার রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে রাজনগর থানায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর পলি আক্তার মামলা দায়ের করে। ঘটনার পর নির্যাতনকরী বখাটে যুবককে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজার সরকারী মহিলা কলেজের ছাত্রীরা মানববন্ধন করে। পুলিশ প্রশাসন আসামীকে গ্রেফতারে জন্য জোর তৎপরতা চালায়। কিন্তু তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে তার অভিভাবককে পুলিশ চাপ সৃষ্টি করে তাকে খুঁজে বের করে দেয়ার জন্য। দুপুরে নির্যাতনকারী সৈয়দ আতিকুজ্জামান পারভেজকে তার মা রহিমা বেগম তরফদার পারভিন মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে উপস্থিত হন। ঘটনাকারী তার নিজের দোষ স্বীকার করে পুলিশ সুপার মোঃ শাহ জালালের কাছে আত্মসর্মপন করে। পুলিশ সুপার জানান, অপরাধী নিজের অপরাধবোধ থেকে অনুতপ্ত হয়ে আত্মসর্মপণ করেছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post