চকবাজারের ইফতারি বাজার প্রথম দিনেই জমজমাট

চকবাজারের ইফতারি বাজার প্রথম দিনেই জমজমাট
চকবাজারের ইফতারি বাজার প্রথম দিনেই জমজমাট
নিউজ ডেস্কঃ ও মা, এত্ত বড় জিলাপি! বিস্ময়ে চোখ ছানাবড়া রাজধানীর ওয়াইডব্লিউসিএ’র নার্সারির ছাত্রী নুসাইবার। এই জিলাপিটার নাম কী, নুসাইবা তার বাবাকে এ প্রশ্ন করতেই পাশে দাঁড়ানো দোকানি ‘নাজিমউদ্দিন পিচ্চি’ চিলের মতো ছোঁ মেরে কথা ছিনিয়ে নিয়ে বললেন, এটার নাম শাহি জিলাপী। মাসকলাইয়ের ডাল আর পোলাউয়ের চাল দিয়ে বিশেষভাবে এটি তৈরি হয়। প্রতি কেজি ১৬০ টাকা। দিমু নাকি ২/১ কেজি স্যার। রমজান শুরুর প্রথম দিন শুক্রবার দুপুর আনুমানিক ১২টায় চাকরিজীবী শাহাদাত হোসেন তার স্কুল পড়ুয়া ছেলে সাদমান ও মেয়ে নুসাইবাকে নিয়ে চকবাজারের ঐতিহ্যবাহী ইফতারের বাজার কেমন জমেছে তা দেখাতে নিয়ে যান। বোনের মতো ভাইও কম অবাক হয়নি। ছোট সাইজের রানের ফ্রাই সাজিয়ে রাখতে দেখে সেও বাবার কাছে জানতে চেয়েছে বাবা এত্তো ছোট মুরগী ওরা কোথায় পেল? বাবা হেসে জানালেন এটা কোনো মুরগীর রান না, এটা কোয়েল পাখির রানের রোস্টট। রমজান শুরুর প্রথম দিনে এমন শত শত আইটেমের ইফতার সাজিয়ে বসেছিল ঐতিহ্যবাহী চকবাজারের ইফতার বিক্রেতারা। সাধারণ আলুরচপ, ডিম চপ, বেগুনী, পিঁয়াজু, সমুচা, সিঙ্গারা, ঘুমনি, ছোলাবুট থেকে শুরু করে ঐতিহ্যবাহী বড় বাপের পোলায় খায়, খাসির রান, গোটা মুরগী ফ্রাই, মুরগী ভাজা, কোয়েল পাখির রান ফ্রাই, ডিম ভাজা, টানা পরোটা, শাহি কাবাব, সুতি কাবাব, সাসলিক, ভেজিটেবল রোল, চিকেন রোল, শাহি জিলাপী, দইবড়া, হালিম, মাঠা, লাবাং, ফালুদাসহ শত শত ইফতারি আইটেমে ঠাসা ছিল ইফতার বাজার। এছাড়া মৌসুমী আম, কলা, আনারস, ভাঙ্গি, কাঠাল, জাম, লিচু, লটকন, পেয়ারা ও পেপেসহ বিভিন্ন ফলফলাদির দোকানও বসেছিল। ছোট-বড় দোকানিরা দুপুর ১২টা থেকেই ইফতার সাজিয়ে হাকডাক দিয়ে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন। চিকন পাতলা গড়নের মাঝ বয়সী আক্কাস মিয়া গলা ফাটিয়ে গানের সুরে বলছিল, ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙ্গা ভইরা লইয়া যায়, ধনী গরীব সবাই খায়, মজা পাইয়া লইয়া যায়। তিনি জানালেন, এটি তার ওস্তাদ মো. সেলিম বাবুর্চির তৈরি ঐতিহ্যবাহী বড় বাপের পোলায় খায় ইফতার। মুড়ি, মুরগীসহ ২০/৩০ প্রকারের আইটেমে এ খাবার তৈরি হয়। প্রতি কেজির দাম ৪০০ টাকা। আক্কাস মিয়া জানালেন, তাদের দোকানে কোয়েল পাখি, কবুতর, চিংড়ি মাছ, জালি কাবাব, কাঠি কাবাব ও আনাম (আস্ত) খাসি পাওয়া যায়। পাশেই পাঞ্জাবি ও টুপি পরিহিত সাত আট বছরের সালমান নামের একটি ছেলে চিৎকার করে বলছিল, ‘লইয়া যান, লইয়া যান, চকের সেরা আলু চপ, ডিম চপ, কাবাব লইয়া যান, এতো মজার খাবার আর কোনহানে পাইবেন না।’ আমানিয়া হোটেলের বাইরে পর্দা টানিয়ে ইফতারের বিভিন্ন আইটেম-চিকেন পরোটা, ভেজিটেবল পরোটা, শাহী জিলাপি, বিফরোল, মাটনরোল ও কাবাব বিক্রির প্রস্তুুতি চলছিল। রফিক নামে এক দোকানি জানালেন, গত বছরের তুলনায় সব আইটেমেরই দাম এবার কিছুটা বেশি। খাসির রোস্ট প্রতি পিস ৪০০ টাকা, মুরগীর ফ্রাই ২২০ টাকা, কোয়েল ফ্রাই ৭০ টাকা, প্রতি পিস সাসলিক (মুরগী) ৫০ টাকা ও (গরু) ৪০ টাকা। আলুচপ, বেগুনি, পিঁয়াজু তিন টাকা থেকে প্রতি পিস ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। 
#জাগো নিউজ

Post a Comment

Previous Post Next Post