অবৈধভাবে ইউরোপ যাওয়ার অভিযোগ; লিবিয়ায় বাংলাদেশি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

 লিবিয়ায় বাংলাদেশি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
 লিবিয়ায় বাংলাদেশি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
নিউজ ডেস্কঃ লিবিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটির সরকার। লিবিয়ায় প্রবেশের পর অবৈধভাবে ইউরোপে যাবার অভিযোগ এনে তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানায় দেশটির সরকারের একজন মুখপাত্র। এদিকে, ভূমধ্যসাগরে অভিবাসীদের নৌকা ব্যবহার করে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস ইউরোপে তাদের সদস্য পাচার করছে বলে অভিযোগ করেছেন লিবীয় সরকারের উপদেষ্টা আব্দুল বাসিত হারুন। জীবিকা নির্বাহের তাড়নায় আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে প্রবাস জীবন যাপন করছে হাজার হাজার বাংলাদেশি। কিন্তু বিভিন্ন সময় প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে হুমকির মুখে পড়ছে এসব দেশের প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা। ২০১১ সালে লিবিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার গাদ্দাফি বিরোধী গণঅভ্যুত্থান ও বিক্ষোভ সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর, তেমনি এক পরিস্থিতির শিকার হন প্রবাসী শ্রমিকরা। লিবিয়ায় প্রায় ৭০ হাজার বাংলাদেশি অভিবাসী কাজ করলেও; এই অস্থিরতার মধ্যে বেশিরভাগ শ্রমিক দেশে ফিরে আসেন। গাদ্দাফির পতনের পর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নতুন করে লিবিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির উদ্যোগ নেয়া হলেও; দেশটিতে পুরোপুরি স্থিতিশীলতা ফিরে না আসায় ব্যত্যয় ঘটে সরকারের সেই প্রচেষ্টায়। তবে শ্রমিকদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে লিবিয়ায় যাওয়া থেমে ছিলো না। তবে শনিবার লিবীয় সরকারের এক ঘোষণায় আটকে গেল ব্যক্তিগত পর্যায়ের সেই প্রচেষ্টাও। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের মুখপাত্র হাতেম উরাইবির বরাত দিয়ে, রয়টার্স বাংলাদেশি শ্রমিকদের লিবিয়ায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা আরোপের খবর জানায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে লিবীয় সরকারের কঠোর অবস্থানের অংশ হিসেবে এই ব্যবস্থা নেয়া হলো। লিবিয়ায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের নিয়ন্ত্রণ দেশটির পূর্বাঞ্চলে সীমাবদ্ধ। তাই সরকারের আরোপিত এই নিষেধাজ্ঞা লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় স্থলসীমা, বন্দর এবং আকাশপথে বলবৎ থাকবে; এর বেশি কিছু জানানো হয়নি। তবে কতদিন পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে তা জানা যায়নি। গাদ্দাফির পতনের পর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি সরকার ব্যবস্থা চালু হলেও; জাতিগত সংঘাত ও বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর আন্তঃকলহের কারণে তা দ্রুতই অকার্যকর হয়ে পড়ে। সে থেকে দেশটির একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠী বিভিন্ন সময় রাজধানী ত্রিপলির দখল নেয়। বর্তমানে লিবিয়ায় নির্বাচিত ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত দু'টি প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান। এদিকে, ভূমধ্যসাগর পথে অভিবাসীদের ছদ্মবেশে ইউরোপে আইএস সদস্যরা প্রবেশ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সুসংগঠিত একটি চক্রের সহায়তায় তারা এ অনুপ্রবেশ করছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছে লিবিয়ার এক সরকারি কর্মকর্তা। লিবীয় সরকারের উপদেষ্টা আবদুল বাসিতের দাবি উত্তর আফ্রিকার এসব নৌকা চলাচল করে আইএস-এর নির্দেশ মেনে। অভিবাসীবাহী নৌকাগুলোর আয়ের ৫০ শতাংশ দিতে হয় আইএসকে। গত বছর থেকে ইরাক ও সিরিয়ার বিভিন্ন অংশ দখলকারী আইএস এ বছরের শুরুর দিকে লিবিয়ায় তাদের উপস্থিতির জানান দেয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post