বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ব্যবহৃত যত প্রযুক্তি

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ব্যবহৃত যত প্রযুক্তি
বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ব্যবহৃত যত প্রযুক্তি
আমিন জাহানঃ খেলার মাঠে প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারের সুবাদে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া বিচারকদের জন্য এখন অনেক সহজ হয়েছে। এর ছোঁয়ায় খেলার সম্প্রচারও হয়ে উঠেছে অনেক প্রাণবন্ত। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে চলমান ক্রিকেট বিশ্বকাপে ব্যবহৃত প্রযুক্তিগুলো নিয়ে এ আয়োজন এলইডি স্টাম্প ও বেল স্টাম্পে ক্যামেরার ব্যবহার অনেক পুরনো। এখন স্ট্যাম্পে এলইডি লাইটের ব্যবহার হচ্ছে। স্টাম্প থেকে বেল আলাদা হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার সহজ উপায়ে পরিণত হয়েছে এ এলইডি লাইট। স্টাম্প থেকে বেল পৃথক হলেই কেবল এ লাইট জ্বলে উঠবে। ফলে আম্পায়ারের পক্ষে এ ধরনের যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া এখন অনেক সহজ হয়েছে। নিম্নে আরো কয়েকটি প্রযুক্তির ব্যাবহার আলচনা করা হলোঃ
  • রিয়াল-টাইম স্নিকোঃ বল ব্যাট অতিক্রম করার সময় তা ব্যাটে লেগেছে কিনা-তা পরীক্ষার নির্ভরযোগ্য প্রযুক্তি স্নিকো। মূলত টেলিভিশনে খেলা দেখানোর সময় এ প্রযুক্তি প্রদর্শন করা হয়। সাউন্ড ও ভিডিওর মাধ্যমে ব্যাটে বল লাগার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। বিশ্ব ক্রিকেটের ডিসিশন রিভিউ সিস্টেমে (ডিআরএস) স্নিকো এখন নির্ভরযোগ্য একটি প্রযুক্তি।
  • হকআইঃ বল করা ও পুনরায় বোলারের কাছে ফিরে আসার আগ পর্যন্ত বলের অবস্থান নির্ণয় করা হয় এ প্রযুক্তির মাধ্যমে। মাঠে থাকা ছয়টি ক্যামেরার মাধ্যমে বলের এ গতিপথ শনাক্ত করা হয়। বলের গতি, বাউন্স ও সুইংয়ের মাত্রা সম্পর্কেও ধারণা দেয় এ প্রযুক্তি। ক্যামেরা ছয়টি থেকে প্রাপ্ত ছবিকে একটি কম্পিউটারের মাধ্যমে থ্রিডি চিত্রে রূপান্তর করে এ চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
  • পিচভিশনঃ ক্রিকেট পিচের বিভিন্ন অবস্থান দেখানো হয় এ প্রযুক্তির মাধ্যমে। বোলারের বল কোথায় পড়ছে, পাশাপাশি পিচের কোন কোন অবস্থানে বল পড়ায় ব্যাটসম্যান কীভাবে তা সামলাচ্ছেন, তা দেখাতে এ প্রযুক্তি ব্যবহার হয়। মূলত পিচে বলের অবস্থান দেখাতেই ব্যবহার হচ্ছে প্রযুক্তিটি।
  • স্পাইডারক্যামঃ খেলা সম্প্রচারের জন্য এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এ ক্যামেরা পুরো মাঠে আনুভূমিক ও উলম্বভাবে চলাচল করতে পারে। মাঠের বিভিন্ন অংশ একটি ক্যামেরার মাধ্যমে প্রদর্শনে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। ক্রিকেট পিচ থেকে শুরু করে পুরো মাঠের যে কোনো অংশের দৃশ্যধারণ করা যায় এ ক্যামেরার লেন্সে।
  • আরপিএম নির্ণয়ঃ ক্রিকেটে বলের আপেক্ষিক ঘূর্ণন নির্ণয়েও প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। বোলারের হাত থেকে ছোটার পর বলটি নিজ অক্ষে প্রতি মিনিটে কয়বার ঘুরছে, তাই এ প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়। আরপিএম বলতে প্রতি মিনিটে ঘূর্ণনের সংখ্যাকে বোঝানো হয়। মূলত স্পিনারদের কার্যকারিতা বোঝাতে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
  • হটস্পটঃ বল ব্যাটে লেগেছে, না প্যাডে - তা নির্ণয়ের সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে হটস্পট। এ ব্যবস্থায় বল যেখানে আঘাত করে, তা স্পষ্ট করে দেখানো হয়। ফলে আম্পায়ারের এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কোনো ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় না। ক্রিকেটে এ প্রযুক্তি খুবই কার্যকর। তবে যন্ত্রাংশের অতিরিক্ত খরচ ও দুটি হোস্ট দেশের সবক’টি ভেনুতে এ প্রযুক্তি সরবরাহ সম্ভব না হওয়ায় চলমান বিশ্বকাপে হটস্পট প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে না।

Post a Comment

Previous Post Next Post