![]() |
দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কুলাউড়ার চা-শিল্পে স্থবিরতা |
দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কুলাউড়ার চা-শিল্পে স্থবিরতাঃ দেশের চলমান পরিস্থিতির কারনে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ২৩টি চা-বাগানসহ জেলার চা-বাগানগুলোতে চরম সংকট ও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। পরিবহন সংকটের কারণে চা-বাগানের উৎপাদিত চা একদিকে চট্টগ্রাম ওয়ার হাউসে প্রেরণ করা যাচ্ছে না, অন্যদিকে জ্বালানি সংকট, বিশেষ করে ডিজেল সংকটের কারণে বাগানগুলোতে পানির পাম্প না চলায় বিভিন্ন বাগানে ইয়াং টি মরে যাচ্ছে। শ্রমিকদের রেশন ও মজুরি দিতেও হিমশিম খাচ্ছে চা-বাগান কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন চা-বাগানের ব্যবস্থাপকরা জানান, দেশের সবচেয়ে বেশি চা-বাগান মৌলভীবাজার জেলায়। দেশের ১৫২ টি চা-বাগানের মধ্যে শুধু মৌলভীবাজার জেলায় চা-বাগানের সংখ্যা ৯২টি। চায়ের রাজধানী হিসেবে খ্যাত মৌলভীবাজারের সুনাম দেশের সর্বত্র। মৌলভীবাজারের উৎপাদিত চা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি হচ্ছে। বিশেষ করে, জেলার গ্রীন টির কদর বিশ্বব্যাপী। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতায় জেলার বাগানগুলোতে জ্বালানি সংকটের কারণে সেচ বন্ধ থাকায় নতুন সম্প্রসারিত চা-গাছ (ইয়াং টি) মরে যাচ্ছে। পরিবহনের অভাবে উৎপাদিত চা চট্টগ্রামের ওয়ার হাউসে নিলামের জন্য পাঠানো যাচ্ছে না। পরিবহনের অভাবে রেশন আনতে না পারায় শ্রমিকদের রেশন দেওয়া যাচ্ছে না এবং চা নিলাম না হওয়ায় টাকার অভাবে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চা-বাগান কর্তৃপক্ষকে।এ ব্যাপারে ইস্পাহানি গ্রুপের মালিকানাধীন কুলাউড়ার গাজীপুর চা-বাগানের ব্যবস্থাপক কাজল মাহমুদ জানান, তাদের নিজস্ব পরিবহন থাকায় পূর্বে উৎপাদিত চা চট্টগ্রাম ওয়ার হাউসে নিলামের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে জ্বালানি সংকটের কারণে বাগানের সেচ পাম্পগুলো বন্ধ রয়েছে। ফলে ইয়াং টি মরে যাচ্ছে। তাছাড়া পরিবহন সমস্যার কারণে শ্রমিকদের রেশন আনা যাচ্ছে না। এ অবস্থা আরও কিছুদিন চলতে থাকলে চা-শিল্পে ভয়াবহ সংকট দেবে বলে তিনি আশঙ্কা করেন।এ ব্যাপারে রোজ টি কোম্পানির মালিকানাধীন কুলাউড়ার রাঙ্গিছড়া চা-বাগানের ব্যবস্থাপক ওয়াহিদুজ্জামান জানান, অবরোধের শুরু থেকে ট্রান্সপোর্টের অভাবে চট্টগ্রামে বাগানের উৎপাদিত চা নিলামের জন্য পাঠানো যাচ্ছে না। ফলে বাগানে আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, এ অবস্থা মৌলভীবাজারের সব কটি চা-বাগানে। এ সমস্যা দ্রুত নিরসন না হলে চা-শিল্পে আরও তীব্র সংকট দেখা দেবে।এ ব্যাপারে লংলা ভ্যালির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, অবরোধের কারণে পরিবহন সমস্যায় বিভিন্ন বাগানের উৎপাদিত চা চট্টগ্রামে নিলামে পাঠাতে না পেরে কিছুটা সমস্যায় রয়েছে। তবে বাগান কী পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, তা আগামী সভায় নিরূপণ করে এর প্রতিকারে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট দেওয়া হবে।